আলীবাবার পর এবার চীনের দ্বিতীয় বৃহত্তম ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান জেডিডটকম বাংলাদেশে ব্যবসার প্রস্তাব দিয়েছে। মূল প্রতিষ্ঠান প্রেস্টিজ ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেড সরকারের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে জানিয়েছে, এরই মধ্যে তারা পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়াসহ কয়েকটি দেশে তাদের বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করেছে। এখন তারা দক্ষিণ এশিয়ার উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তি বাংলাদেশে বাণিজ্য করতে চাচ্ছে। প্রেস্টিজ ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান টিনা ইয়ং সম্প্রতি বেইজিংয়ে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসে চিঠি পাঠিয়ে এ বাণিজ্যিক প্রস্তাব দেন।
প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, তাদের প্রস্তাব গৃহীত হলে তারা জেডিডটকমের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশের পণ্য নিয়ে একটি জাতীয় প্যাভিলিয়ন প্রতিষ্ঠা করবে। এর ফলে একদিকে যেমন বাংলাদেশের মানসম্পন্ন পণ্য সম্পর্কে চীনের ভোক্তারা জানতে পারবেন। তেমনি বাংলাদেশি ক্রেতারাও এ প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বৈশ্বিক পণ্যের বাজারে প্রবেশের সুযোগ পাবেন।বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, দূতাবাসের মাধ্যমে তারা জেডিডটকমের প্রস্তাব পাওয়ার পর এ বিষয়ে একটি আন্তমন্ত্রণালয় সভা করেছেন। ওই সভায় ক্রসবর্ডার বাণিজ্যের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের মতামত চাওয়া হয়েছে। মতামত পেলে প্রতিষ্ঠানটির বাণিজ্যিক প্রস্তাব সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান ওই কর্মকর্তা। জানা গেছে, ব্যবসার আকারের দিক থেকে চীনে আলিবাবা ডটকমের পরই আছে জেডিডটকম। প্রতিষ্ঠানটি চীনের বৃহত্তম ডাইরেক্ট অনলাইন রিটেইলার। ২০২২ সাল শেষে প্রতিষ্ঠানটির মোট রাজস্ব আয়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৫১ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অনলাইনে পণ্য বিক্রি ছাড়াও প্রতিষ্ঠানটি বিজ্ঞাপন, লেনদেন প্রক্রিয়াকরণ, ইন্টারনেট ফিন্যান্সিংসহ বিভিন্ন মূল্য সংযুক্ত সেবা প্রদান করে থাকে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আলীবাবা ডটকমও বাংলাদেশে বাণিজ্যের প্রস্তাব দিয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠান দুটির মূল পার্থক্য হচ্ছে- জেডিডটকম তাদের নিজস্ব সরবরাহকারীদের কাছ থেকে পণ্য সংগ্রহ করে এবং অনলাইনে ও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে ভোক্তাদের কাছে বিক্রি করে আর অন্যদিকে আলিবাবা অনলাইনে একটি প্ল্যাটফরম তৈরি করে রেখেছে যেখানে যে কোনো ব্যবসায়ী তাদের পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে জেডিডটকম বাণিজ্যের সুযোগ পেলে তারা বাংলাদেশি উদ্যোক্তাদের পণ্য সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য তাদের ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ ন্যাশনাল প্যাভিলিয়নে তুলে ধরবে। এর ফলে চীনের ভোক্তারাও বাংলাদেশি পণ্য সম্পর্কে জানতে পারবে। দূতাবাসে পাঠানো চিঠিতে মূল প্রতিষ্ঠান প্রেস্টিজ ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডিং কোম্পানি লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান টিনা ইয়ং উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ জাতীয় প্যাভিলিয়ন হবে এমন একটি জানালা, যা বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্ভাবনা ছাড়াও বাংলাদেশের সংস্কৃতি, পর্যটন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসহ সব সম্ভাবনার সুযোগ তুলে ধরবে চীনের কাছে। এর ফলে চীনের ভোক্তারা বাংলাদেশের পর্যটন, সংস্কৃতি ও পণ্যের গুণগতমান সম্পর্কে সহজেই জানতে পারবে। এতে দুই দেশের ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তারাও তাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলো চিহ্নিত করার সুযোগ পাবে।