বিশ্বব্যাংককে সংস্কার করে উন্নয়নশীল দেশগুলোকে চীনের হাত থেকে বাঁচাতে হবে

0
81

বিশ্বব্যাংকের সংস্কার এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে চীনের কবজা থেকে রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটেনের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। ২০১০ থেকে ২০১৬ এই ছয় সাল দেশটির প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকারী ক্যামেরন ব্রিটিশ মর্যাদাশীল দৈনিক টেলিগ্রাফে লেখা এক কলামে এ আহ্বান জানান।

ক্যামেরন লিখেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা আগের চেয়ে অনেক বেশি। কোভিড-১৯ মহামারী, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন এবং বিপর্যয়কর জলবায়ু পরিবর্তন দরিদ্রতম দেশগুলোর জন্য একটি ত্রিমুখী আঘাত। দারিদ্র্য এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা সস্তা নয় উল্লেখ করে তিনি লিখেন, এটি অনুমান করা হয় যে সবুজ-শক্তি রূপান্তর এবং টেকসই উন্নয়নে বিনিয়োগের জন্য প্রতি বছর আরও এক ট্রিলিয়ন ডলার সরাসরি অর্থায়নের প্রয়োজন হবে। আর তা এমন এক সময়ে করতে হবে যখন অনেক ধনী দেশেও সরকারের রাজস্ব হ্রাস পেয়েছে এবং বেড়েছে ঋণের বোঝা। সমাধানের প্রস্তাব দিয়ে তিনি লিখেন, এই ধাঁধার কোনও সহজ উত্তর নেই, তবে আমরা যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপটি নিতে পারি তা হল “বহুপাক্ষিক উন্নয়ন ব্যাংক” (এমডিবি) সংস্কার। খুব কম লোকই এই শব্দটি শুনেছেন, তবে সবাই সবচেয়ে বিখ্যাত উদাহরণটি জানেন। আর তা হচ্ছে বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।  কলামে বলা হয়, তুরস্কের উইন্ডফার্ম থেকে শুরু করে ইন্দোনেশিয়ার টোল রোড এবং রুয়ান্ডার হাসপাতাল পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে এমডিবি ঋণ এবং সহায়তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে। ক্যামেরন মনে করেন, এমডিবি কেবল পৃথক সরকারের সাথে কাজ করার পরিবর্তে বিভিন্ন দেশে কাজ করতে পারে। তাদের আরও স্বচ্ছ হতে হবে এবং বেসরকারী মূলধনের সাথে আরও ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে। তাঁর মতে, তাদের উচিত শুধু বড় অবকাঠামো প্রকল্পের পরিবর্তে ছোট ও মাঝারি আকারের সংস্থাগুলিতে মনোনিবেশ করা এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোকে আরও বেশি কথা বলার সুযোগ দান। 

কলামে লেখা হয়, ২০১৭ সাল থেকে চীন বিশ্বব্যাংক, আইএমএফ এবং ঐতিহ্যবাহী ঋণদাতাদের সম্মিলিতভাবে ছাড়িয়ে বিশ্বের বৃহত্তম সরকারী ঋণদাতা হয়ে উঠেছে। তবে সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, এমডিবি সংস্কার করা হলে তা উন্নয়নশীল বিশ্বে চীনের প্রভাবের বিপরীতে কাজ করবে। তিনি বলেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে চীন বিশাল অবকাঠামো প্রকল্পে বিপুল পরিমাণ ঋণ দিচ্ছে। ঋণগ্রহীতারাও তা লুফে নিচ্ছে। কারণ তারা মনে করছে চীনা ঋণে ঐতিহ্যবাহী পশ্চিমা প্রতিষ্ঠানগুলোর তুলনায় কম শর্ত যুক্ত রয়েছে। কিন্তু তারা বুঝতে পারছে না যে চীন দেশগুলোকে এমন ঋণে জর্জরিত করছে, যা তারা পরিশোধ করতে পারছে না।  

সূত্র: টেলিগ্রাফ, ইউকে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here