বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করে ৯৯৯-এ ফোন ছেলের

0
91

নরসিংদীর রায়পুরায় নেশাগ্রস্ত ছেলের দায়ের কোপে বাবা হাজী আইনুল হক (৭০) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ঘাতক ছেলে ইয়াসিন (২৮) কে আটক করেছে পুলিশ। রবিবার সকালে উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের মেজেরকান্দি উত্তরপাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। অভিযুক্ত ইয়াসিন হাজী আইনুল হকের দ্বিতীয় ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, ইয়াছিনের স্ত্রী হাওয়া বেগমের সাথে তার বাবা ও মায়ের বিভিন্ন পারিবারিক সমস্যা চলছিলো। যার কারণে তার স্ত্রী বেশির ভাগ সময়ই বাবার বাড়িতে থাকতো। আজকে সকালে এসব বিষয় নিয়ে ইয়াছিনের পিতার সাথে তর্কাতর্কি হয়। এক পর্যায়ে সে ক্ষিপ্ত হয়ে পিতা আইনুলকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। পরে সে নিজেই ৯৯৯ এ কল দিয়ে পিতাকে হত্যার কথা জানায়। পরে পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে ইয়াছিনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। স্থানীয়রা জানায়, তার বাবা নেশাগ্রস্ত ছেলেকে প্রচুর প্রশ্রয় দিতেন। তার অনেক কুকর্ম তিনি টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা দিয়েছিলেন। সর্বশেষ আজ সেই নেশাগ্রস্ত ছেলেই তাকে কুপিয়ে হত্যা করলো।
নিহত আইনুলের পূত্রবধূ হাওয়া বেগম বলেন, আমার বিয়ে হয়েছে ৪ বছর। আমার শ্বশুর ও সৎ শাশুড়ির অত্যাচারের কারণে আমি বেশির ভাগ সময় বাপের বাড়িতে কাটিয়েছি। আমাদের বিষয় নিয়ে প্রায়ই শ্বশুর-শাশুড়ির সাথে ঝগড়া হতো। পরে আজ আমার স্বামী দা দিয়ে কুপিয়ে আমার শ্বশুরকে হত্যা করে।

ইয়াসিন মাদক সেবনের সাথে জড়িত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি বিয়ের পর দেখতাম সে মাদক সেবন করতো। কিন্তু আজ এগারো মাস যাবৎ তিনি কোন মাদক সেবনের সাথে জড়িত নেই। বিশ্বাস না হলে আপনারা তাকে টেস্ট করে দেখতে পারেন।

নিহতের বন্ধু হাজী কল্যাণ সংগঠনের মির্জানগর ইউনিয়নের সভাপতি হাজী আলম ভূঁইয়া বলেন, আইনুল হাজী কল্যাণের মির্জানগর ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আমরা ২০১৪ সালে এক সঙ্গে হজ পালন করেছি। তারপর থেকে তার সাথে আমার একটা সুসম্পর্ক। তিনি প্রায়ই এ নেশাপ্রস্ত ছেলেকে নিয়ে কথা বলতেন। তিনি তাকে খুব ভয়ও পেতেন। তার জন্য নরসিংদীতে একটি বাড়িও বিক্রি করতে হয়েছে বলে বলেছিলেন তিনি। আজ সকালে শুনতে পেলাম ইয়াসিন তার বাবা আইনুলকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। আমরা এমন পাষণ্ড ছেলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। 

রায়পুরা থানার উপ-পরিদর্শক নবী হোসেন বলেন, দা দিয়ে কুপিয়ে বাবাকে হত্যার পর ঘাতক ছেলে ইয়াসিন নিজেই ৯৯৯ এ কল করে বিষয়টি জানান। পরে আমরা তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যাই। এ ঘটনায় হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞেসাবাদের জন্য ইয়াসিনের স্ত্রী ও শ্বাশুড়িকে থানায় নেওয়া হয়েছে। সুরতহাল প্রস্তুতকালে নিহতের মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের চারটা জখমের চিহ্ন দেখা গেছে। লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এঘটনায় পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা হন করা হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here