চিকিৎসকসহ জনবল সংকটে ভুগছে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। তবে সেবার মান ভালো হলেও ওষুধের স্বল্পতা এবং শয্যার চেয়ে রোগীদের সংখ্যা বেশি হওয়ায় কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সার্জারি এবং অ্যানেস্থেসিয়া চিকিৎসক না থাকায় উন্নত অপারেশন থিয়েটার থাকলেও অপারেশন বন্ধ।
অন্যদিকে বেশি রোগীর চাপ সামলে সেবা দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ৮ বছর ধরে অচল ও অকেজো হয়ে পড়ে আছে একটি অ্যাম্বুলেন্স। এছাড়াও আরও দুটি অ্যাম্বুলেন্স আছে। রোগী বহনের সচল এই অ্যাম্বুলেন্স দুটি থাকলেও এর চালক পদে বর্তমানে কোনো জনবল নেই। তবে এই হাসপাতালের মালি বর্তমানে অ্যাম্বুলেন্সের চালক হিসেবে কাজ করছেন বলে জানান ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার।ঘোড়াঘাট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য মতে, ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যার হাসপাতালের অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন। ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে মেডিকেল অফিসারসহ জনবল ১০ জন রয়েছে। ৩১ শয্যার স্থলে বর্তমানে গড়ে ৩৩-৪০ জন রোগী ভর্তি থাকছে। নার্স, পিয়নসহ অন্যান্য জনবলও সংকট।
এদিকে, চালকের অভাব থাকলেও রোগী বহনে অ্যাম্বুলেন্স সচল রেখেছেন হাসপাতালের মালি। মাজেদ নামে হাসপাতালের ওই মালি অল্টারনেটিভভাবে অ্যাম্বুলেন্স দুটি চালান। একটি রোগী এবং অপরটিতে মরদেহ বহন করা হয়ে থাকে। এতে সময়মতো অ্যাম্বুলেন্স নিয়েও রোগীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
সেবা নিতে আসা সুলতান কবির জানান, চিকিৎসা সেবা ভালো। ওষুধ পেলেও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে বাইরে যেতে হয়। বাইরে পরীক্ষা করার খরচ বেশি। পরীক্ষা করাতে রোগীদের দালালের খপ্পরে পড়তে হয়।
এ ব্যাপারে ঘোড়াঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার জানান, পড়ে থাকা অ্যাম্বুলেন্সের যান্ত্রিক কিছু ত্রুটি থাকায় মেরামত অযোগ্য হয়ে পড়ে আছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। বর্তমানে দুটি অ্যাম্বুলেন্স রয়েছে। তবে অ্যাম্বুলেন্সের চালক সংকট রয়েছে। একজন চালক মামলা সংক্রান্ত সমস্যায় বরখাস্ত হয়ে আছেন। এ অবস্থায় হাসপাতালের মালি তার ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকায় তিনি সচল অ্যাম্বুলেন্সের চালক হিসেবে কাজ করছেন।
তিনি আরও জানান, বর্তমানে বেডের চেয়ে রোগী ভর্তি বেশি রয়েছেন। এক্ষেত্রে বর্ধিত রোগীর খাবার দিতে না পারায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এছাড়াও ওষুধের স্বল্পতা থাকায় সকল রোগীর প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া যাচ্ছে না। তবে আউটডোরে রোগীদের ওষুধ দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রতিদিন আউটডোরে ৫০০-৬০০ জন রোগী দেখতে হিমশিম খেতে হয় চিকিৎসকদের। চিকিৎসকসহ জনবল সংকট দূর হলে অপারেশন থিয়েটারটিও সার্বক্ষণিক চালু রাখ সম্ভব হবে। ৩১ শয্যার হাসপাতালকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এটি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।