জলাধার পরিদর্শনে গিয়ে সেলফি তোলার সময় হঠাৎ পানিতে পড়ে যায় সরকারি কর্মকর্তার দামি ফোন। সেটি উদ্ধার করতে প্রথমে তিনি ডুবুরি নামান ওই গভীর জলাধারে। কিন্তু খুঁজে না পাওয়ায় পুরো পানি সেচে ফেলার নির্দেশ দেন ওই কর্মকর্তা। সম্প্রতি এ ঘটনা ঘটেছে ভারতের ছত্তিশগড়ে।
বিবিসির খবর অনুসারে, ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে রাজেশ বিশ্বাস নামে ওই খাদ্য পরিদর্শককে। তার দাবি, পানিতে পড়ে যাওয়া ফোনটিতে সরকারি স্পর্শকাতর তথ্য ছিল। তাই সেটি উদ্ধার করা জরুরি হয়ে পড়েছিল।
জানা যায়, গত রোববার ছত্তিশগড়ের খেরখাট্টা বাঁধ পরিদর্শনে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে সেলফি তোলার সময় হঠাৎ জলাধারের পানিতে পড়ে যায় স্যামসাং ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন, যার দাম ছিল এক লাখ রুপি।
সেটি উদ্ধারে প্রথমে স্থানীয় ডুবুরিদের জলাধারে নামানো হয়। কিন্তু তারা ফোনটি খুঁজে পাননি। পরে পানি সেচে ফেলার জন্য আনা হয় ডিজেলচালিত পাম্প।
রাজেশ বিশ্বাস ভারতীয় মিডিয়াকে বলেছেন, জলাধারের ‘কিছু পানি’ কাছের একটি খালে নিষ্কাশন করার জন্য এক কর্মকর্তার কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়েছিলেন তিনি। তার দাবি, এই কাজে কৃষকদেরই উপকার হতো।
তবে এই ‘কিছু পানি’র পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল প্রায় ২০ লাখ লিটার, যা দিয়ে ছয় বর্গকিলোমিটার (৬০০ হেক্টর) কৃষিজমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব। সরকারি কর্তার নির্দেশে জলাধার থেকে বিপুল পরিমাণ এই পানি সরাতে কয়েকদিন ধরে পাম্প চালানো হয়।
পরে ভারতীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা এসে সেই কাজ বন্ধ করেন। প্রিয়াঙ্কা শুক্লা নামে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাকে (রাজেশ) বরখাস্ত করা হয়েছে। পানি একটি অপরিহার্য সম্পদ। এটি এভাবে নষ্ট করা যায় না।
রাজেশ অবশ্য তার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, তিনি বাঁধের ওভারফ্লো অংশ থেকে পানি সেচের নির্দেশ দিয়েছিলেন এবং তা ‘ব্যবহারযোগ্য অবস্থায় ছিল না’।
সরকারি কর্মকর্তার এমন সিদ্ধান্তের ব্যাপক সমালোচনা করেছেন স্থানীয় রাজনীতিবিদরা। রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপির জাতীয় সহ-সভাপতি টুইট করেছেন, মানুষ যখন উত্তপ্ত গ্রীষ্মে পানির জন্য ট্যাংকারের ওপর নির্ভর করছে, তখন ওই কর্মকর্তা লাখ লাখ লিটার পানি নিষ্কাশন করেছেন, যা সেচের জন্য ব্যবহার করা যেতো।
এদিকে, যে ফোনের জন্য এত কাণ্ড, সেটি শেষপর্যন্ত উদ্ধার হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু পানি ঢোকায় তা আর সচল করা যায়নি।