বৃহস্পতিবার চীনের বেইজিংয়ে একটি আন্তর্জাতিক প্রীতিম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার মুখোমুখি হয় সুপারস্টার লিওনেল মেসি নেতৃত্বাধীন বিশ্বচ্যাপিয়ন আর্জেন্টিনা। এই ম্যাচে ক্যারিয়ারের দ্রুততম গোলের রেকর্ড করেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক।
বেইজিংয়ের ওয়ার্কার্স স্টেডিয়ামের ওই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ২-০ গোলে হারায় আর্জেন্টিনা। খেলা শুরুর মাত্র ৭৯ সেকেন্ডে গোল করেন মেসি।প্রীতিম্যাচ হলেও আর্জেন্টিনা পূর্ণশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছিল। খেলেছেও গুরুত্ব দিয়ে। খেলার শুরুতেই অস্ট্রেলিয়ার হাফে বল পেয়ে যান আর্জেন্টিনার এনজো ফার্নান্ডেজ। তিনি বল দেন মেসিকে। বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবলার অস্ট্রেলিয়ার দু’জন ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সের বাইরে থেকে বাঁকানো শটে গোলরক্ষককে পরাস্ত করে বল নেটে জড়িয়ে দেন মেসি। ৭৯ সেকেন্ডে এই গোল করেন তিনি, যা তার আন্তর্জাতিক ম্যাচে দ্রুততম গোল।
আর্জেন্টিনার দ্বিতীয় গোল আসে দ্বিতীয়ার্ধে। রডরিগো বল ভাসিয়ে দেন অস্ট্রেলিয়ার বক্সে। পরিবর্ত ফুটবলার পেজেল্লা দুই ডিফেন্ডারের মধ্যে থেকে হেড করে গোল করেন।
আগামী সপ্তাহেই ৩৬তম জন্মদিন পালন করবেন আর্জেন্টিনার অধিনায়ক মেসি। তার আগে তিনি আর্জেন্টিনার হয়ে পরপর সাতটি ম্যাচে গোল করলেন। সুতরাং একটা কথা স্পষ্ট, এখনও সেরা ফর্মেই আছেন মেসি।
এর আগেই দুই থেকে ৯০ মিনিট পর্যন্ত প্রতিটি মিনিটে গোল করার রেকর্ড ছিল মেসির। এবার দুই মিনিটের আগে গোল করে রেকর্ডের বৃত্ত সম্পূর্ণ করলেন বর্তমান ফুটবল বিশ্বের অন্যতম এই মহাতারকা।
গত সপ্তাহেই মেসি জানিয়েছেন, তিনি পিএসজি ছেড়ে দিচ্ছেন। এবার তিনি যোগ দেবেন আমেরিকার ইন্টার মায়ামিতে। এই ক্লাবে সাবেক ফুটবলার বেকহ্যামের মালিকানা আছে।
ম্যাচ শেষে মেসি বলেন, “আমি বরাবরই দেশের হয়ে খেলাটা উপভোগ করি। এখানে প্রচণ্ড গরম ছিল। আর্দ্রতাও ছিল খুব বেশি। আমরা এই সব প্রতিকূলতাকে ছাপিয়ে আগের মতো পরিকল্পনামাফিক ফুটবল উপহার দিয়ে।”
গত সপ্তাহেই চীনে পৌঁছান মেসি। এরপর থেকেই তার হোটেলের সামনে, স্টেডিয়ামে প্র্যাকটিস করতে যাওয়ার পথে ভিড় করেছেন সমর্থকেরা। আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে সমর্থকেরা মেসিকে এক ঝলক দেখার জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেছেন।
মেসির গোলের পর উল্লাসে ফেটে পড়ে গোটা স্টেডিয়াম। দলের বাকি খেলোয়াড়রা দৌড়ে গিয়ে মেসিকে জড়িয়ে ধরেন। আন্তর্জাতিক ও ক্লাব মিলিয়ে মোট এক হাজার ২৮টি ম্যাচে মেসি ৮০৭টি গোল করেছেন। অ্যাসিস্ট করেছেন ৩৩৮টি গোলের ক্ষেত্রে।
বেইজিংয়ের ওই স্টেডিয়ামে ৬৮ হাজার দর্শক খেলা দেখেন। তাদের অধিকাংশই আর্জেন্টিনার সাদা-নীল জার্সি পরেছিলেন।
অস্ট্রেলিয়ার কোচ গ্রাহাম আর্নল্ড বলেছেন, “আমি তো দর্শকদের মধ্যে হলুদ জার্সি খুঁজেই পাইনি। শুধু ১০ নম্বরের আর্জেন্টিনার জার্সি। জীবনে আমি আর্জেন্টিনার ১০ নম্বর জার্সি পরা এত দর্শক দেখিনি। জার্সি প্রস্তুতকারকদের উচিত, লাভের একটা অংশ মেসিকে দেওয়া।”
প্রদর্শনী ম্যাচ হলেও আর্জেন্টিনা তা হালকাভাবে নেয়নি। মেসি তো পুরো ৯০ মিনিট মাঠে ছিলেন। দ্বিতীয় গোলের আগে মেসির এক ভক্ত নিরাপত্তারক্ষীদের ফাঁকি দিয়ে মাঠে ঢুকে পড়েন। তিনি মেসিকে জড়িয়ে ধরেন। তারপর সেন্টার সার্কেলে আসার পর গোলরক্ষক মার্তিনেজের সঙ্গে হাই ফাইভ করেন। এরপর নিরাপত্তারক্ষীরা তাকে ধরে ফেলেন এবং নিয়ে যান। সূত্র: রয়টার্স