বিএনপি প্রমাণ করেছে প্রধানমন্ত্রীকে হুমকির বক্তব্য তাদের : তথ্যমন্ত্রী

0
90

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সিরাজগঞ্জে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হুমকি দেওয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে বিএনপি প্রমাণ করেছে এটা তাদেরই বক্তব্য। 

রবিবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে এ বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এর আগে রাজশাহী বিএনপির আহ্বায়ক জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন এরপর সিরাজগঞ্জে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল হাসান রঞ্জন জননেত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। আসলে বিএনপি ভেতরে ভেতরে যে ষড়যন্ত্রটা করছে, সেটিরই বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে তাদের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের এই সমস্ত বক্তব্য।’ 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর স্বাধীনতাবিরোধী দেশি ও আন্তর্জাতিক অপশক্তি মিলে বঙ্গবন্ধুকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে হত্যার পথ বেছে নিয়েছিল। আজকেও বিএনপিসহ যে রাজনৈতিক অপশক্তি বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়, তারা জননেত্রী শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়েছে, পরপর তিনবার জনগণের রায় নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন। বঙ্গবন্ধুকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছিল আজকে বিএনপি যে সেই একই পথে হাঁটছে, একই পরিকল্পনা করছে, বিভিন্ন জায়গায় বিএনপি নেতাদের এ সমস্ত বক্তব্য তারই বহিঃপ্রকাশ।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি দুটি ষড়যন্ত্র নিয়ে এগুচ্ছে। একটি হচ্ছে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ‘এলিমিনেট’ করা, আরেকটি হচ্ছে দেশে একটি অস্বাভাবিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করে দেশটাকে অপশক্তির হাতে তুলে দেওয়া। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ সেটি হতে দেবে না। আমি সিরাজগঞ্জে যে ঘটনা ঘটেছে তার তীব্র নিন্দা জানাই। বিএনপিরই উচিত ছিল তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সেটি না করে বরং তার পক্ষ অবলম্বন করে বিএনপি স্বীকার করে নিয়েছে এটি তাদেরই বক্তব্য।’ 

বিএনপি মহাসচিবের ক্রমাগতভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নিয়ে প্রশ্নে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘মির্জা ফখরুল সাহেবকে ‘তত্ত্বাবধায়ক রোগে’ পেয়ে বসেছে। এটি মির্জা ফখরুল সাহেবের গতানুগতিক প্রতিদিনের বক্তব্য। সংবিধান অনুযায়ী চলতি সরকারই নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করবে এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্বাচনকালীন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশ যেমন ভারত, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান, নিউজিল্যান্ড এবং কন্টিনেন্টাল ইউরোপের বিভিন্ন দেশে যেভাবে চলতি সরকার নির্বাচনকালীন সময়ে নির্বাচনকালীন সরকারের দায়িত্ব পালন করে, আমাদের দেশেও তাই হবে। সংবিধানের কোনো ব্যত্যয় হবে না।’

তিনি বলেন, ‘তাদের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই দাবিটা আন্তর্জাতিকভাবে কারো সমর্থন পায়নি। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও তাদের এই দাবিকে সমর্থন করেনি। এটা শুধু মির্জা ফখরুল সাহেবের মুখের মধ্যেই আছে। আশা করি তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকার রোগ থেকে মুক্তি লাভ করবেন।’ 

মার্কিন ভিসা নীতি নিয়ে চীনের মন্তব্য বিষয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্র নীতি হচ্ছে সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়। যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের দ্বিমুখী অবস্থান আন্তর্জাতিকভাবে আমরা বিভিন্ন সময় দেখি। এই ক্ষেত্রেও চীন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি নিয়ে মন্তব্য করেছে, আমরা সেটা পর্যবেক্ষণ করছি। আমাদের সাথে দু’দেশেরই অত্যন্ত চমৎকার সম্পর্ক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের উন্নয়ন সহযোগী, গত ৫১ বছরে আমাদের পথচলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। তাদের সাথে সম্পর্ক আরো দৃঢ় করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। একইসাথে চীনও আমাদের উন্নয়ন সহযোগী এবং এ দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা রেখেছে। সুতরাং সব দেশের সাথেই আমাদের অত্যন্ত ভালো সম্পর্ক।’

এর আগে সকালে বন্দরনগরী চট্টগ্রামের জামালখান মোড়ে বিএনপির তারুণ্যের সমাবেশের সময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রামের বীরদের প্রতিকৃতি ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের ছবি ভাঙচুরের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তথ্যমন্ত্রী। 

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘যাদের হাতে বাংলাদেশের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্য নিরাপদ নয়, তাদের হাতে কখনো দেশ নিরাপদ হতে পারে না। সেই বিএনপি নাকি আবার দেশ পরিচালনা করার কথা স্বপ্ন দেখে!’ 

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি তারুণ্যের সমাবেশের কথা বলে এদিক দিয়ে যাবার সময় বঙ্গবন্ধুর সমস্ত ছবি এবং বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালসহ মুক্তি আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া অন্যান্যদের ছবিও ভাঙচুর করেছে। এই দায় দলটির নেতারা কোনভাবেই এড়াতে পারে না। এ ন্যাক্কারজনক ঘটনায় ইতিমধ্যে মামলা হয়েছে। জড়িতদের বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে যারা তাদের নেতা, যারা তরুণদেরকে এ ধরনের নৈরাজ্য শিক্ষা দিচ্ছে এবং এগুলোর নেতৃত্ব দিচ্ছে তারা দায় এড়াতে পারে না। তাদেরকেও অবশ্যই আইনের আওতায় আনা প্রয়োজন। অনন্য এই প্রতিকৃতি ও ছবিগুলো আবার আগের মত দৃষ্টিনন্দন করে তৈরি ও পুণঃস্থাপন করা হবে বলে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জানিয়েছেন।’

এ সময় আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশসহ দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। 

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here