এক রাতেই দুই বছর পর্যন্ত কমে গেল কোরিয়ানদের বয়স!

0
82

এক রাতের মধ্যেই এক থেকে দুই বছর পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের বয়স। সাধারণ জনগণের ‘বয়স গণনা পদ্ধতিতে’ পরিবর্তন আনায় দেশটির ৫ কোটি ১০ লাখ মানুষের বয়স এভাবে কমে যায়।

জানা গেছে, বয়স গণনার ক্ষেত্রে পুরো বিশ্বে একটি সাধারণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু কোরিয়ানরা এক্ষেত্রে নিজস্ব পদ্ধতি ব্যবহার করত। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোর সঙ্গে মিলিয়ে এখন বৈশ্বিক পদ্ধতি ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির সরকার।পুরো বিশ্বে বয়স নির্ণয়ের ক্ষেত্রে যে পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, সেটিতে যখন একটি শিশু জন্ম নেয়— সেই জন্মের দিন থেকে পরবর্তী বছরের এই একই দিন পূর্ণ হলে— এক বছর হিসেবে ধরা হয়।

কিন্তু কোরিয়ান পদ্ধতিতে, জন্মের পরপরই ওই শিশুকে এক বছর বয়সী শিশু হিসেবে ধরা হয়। আর প্রতি বছরের ১ জানুয়ারি ওই বছরের সঙ্গে নতুন করে এক বছর যুক্ত হয়।

এছাড়া বয়স নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ‘ক্যালেন্ডার পদ্ধতিও ব্যবহার করে দেশটি। এই পদ্ধতিতে, যখন একটি শিশুর জন্ম হয়— সেদিনকে আন্তর্জাতিক পদ্ধতির মতোই শূন্য দিন হিসেবে ধরা হয়। কিন্তু যখন শিশুর জন্মের পর প্রথম ১ জানুয়ারি আসে, সেদিন তার বয়সের সঙ্গে ১ বছর যুক্ত করা হয়।

কোরিয়ান বার্তাসংস্থা ইয়োনহাপ জানিয়েছে, বুধবার থেকেই নতুন পদ্ধতি কার্যকর করা হয়েছে। এখন থেকে বিচারিক এবং প্রশাসনিক সবক্ষেত্রে কোরিয়ানদের বয়স আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে ধরা হবে।

গত বছরের ডিসেম্বরে দেশটির পার্লামেন্টে বয়স নির্ণয় পদ্ধতি আইনে পরিবর্তন আনা হয়।

বয়স নির্ণয়ের এই পদ্ধতির কারণে খোদ কোরিয়ানদের মধ্যেই বিভ্রান্তি কাজ করে। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কার্যকর করা নতুন পদ্ধতি এসব বিভ্রান্তি দূর করবে।

কোরিয়ায় যেসব বয়স্ক মানুষ রয়েছেন তাদের মধ্যে মূলত এই বিভ্রান্তিটা বেশি। কারণ কোরিয়ান পদ্ধতিতে গণনার কারণে তারা অনেকে মনে করেন, বিনামূলে ভ্রমণ ও সরকারি পেনসনসহ যেসব সুবিধা রয়েছে— সেগুলো পাওয়ার মতো বয়স তাদের হয়ে গেছে। কিন্তু বাস্তবে তাদের সেই বয়স হয় না।

দেশটিতে স্কুল, সামরিক বাহিনীতে যোগদান এবং মদ পানের যে বৈধ বয়স রয়েছে, সেটি নির্ণয় করা হয় ‘ইয়ার এজ’ পদ্ধতিতে। এসব ক্ষেত্রে ‘ইয়ার এজ’ পদ্ধতিই বহাল থাকবে।

উদাহরণস্বরূপ, যারা ২০০৪ সালে জন্ম নিয়েছিল— হোক সেটি বছরের প্রথম মাস জানুয়ারি অথবা শেষ মাস ডিসেম্বর— তারা ২০২৩ সালের জানুয়ারিতেই সামরিক বাহিনীতে যোগ দেওয়ার ক্ষেত্রে যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবেন। কারণ ‘ইয়ার এজ’ পদ্ধতিতে তাদের সবার বয়সই ১৯ বছর হয়ে যাবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউলের একটি অফিসে কাজ করেন চোই হাইয়ুন-ঝি নামের এক তরুণী। তিনি বলেছেন, “কোরিয়ান পদ্ধতিতে আমার বয়স ২০২৪ সালে ৩০ বছর হতো। কিন্তু এখন ৩০ বছরে পাঁ দিতে আমার আরও সময় লাগবে, বিষয়টি পছন্দ হয়েছে।”

আন্তর্জাতিক পদ্ধতিতে এখন এই তরুণীর বয়স ২৭ বছর। সূত্র: আলজাজিরাসিএনএনরয়টার্সবিবিসি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here