তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙন, নদীগর্ভে বিলীন বাড়িঘর

0
77

কুড়িগ্রামে গত দুই সপ্তাহ ধরে চলছে তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙন। বাড়িঘর, স্কুল, মাঠ, ঘাট, আবাদি জমি ও অন্যান্য স্থাপনা নদীগর্ভে ভেঙে যাচ্ছে। গত কয়েক দিনে তিস্তা নদনদী অববাহিকার বিভিন্ন এলাকার শতবিঘা আবাদি জমি, অর্ধশতাধিক বাড়িঘর এবং একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

এছাড়াও হুমকিতে রয়েছে আরো দেড় শতাধিক ঘরবাড়ি ও বেশ কিছু স্থাপনা। আর এ নদী ভাঙন রোধে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুর বস্তা ও জিও ব্যাগ ফেলে কাজ করলেও তা কোনো কাজে আসছে না বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের। ভাঙন কবলিত মানুষ তাদের বসতবাড়ি রক্ষায় স্থায়ী প্রতিরোধ ব্যবস্থার দাবি জানিয়েছেন।সরেজমিন দেখা যায়, জেলার উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের বজরা পশ্চিমপাড়া গ্রামের ভাঙন কবলিতদের নিজস্ব জমিজমা না থাকায় নদী তীরবর্তী মানুষ তাদের বাড়িঘর সরিয়ে খোলা আকাশে ফেলে রেখেছেন। ঈদের এক সপ্তাহ আগে থেকেই এসব এলাকায় নদী ভাঙন চলছিল। এখানকার মানুষজন দিশেহারা হয়ে পড়েন। পাউবো জিও ব্যাগ দিয়ে পার্শ্ববর্তী সরকারি প্রাইমারী স্কুলটি রক্ষার চেষ্টা করলেও জিও ব্যাগসহ সেটি নদী গর্ভে চলে যায়। এসময় ভেঙে গেছে আরও ৪৫ থেকে ৫০টি বসতভিটা। সবজি ও পাটক্ষেতসহ শত বিঘা আবাদি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। সেই সাথে গাছপালা-পুকুর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে।

বজরা এলাকার নদী তীরবর্তী পঞ্চাশোর্ধ্ব শহিদুর ইসলাম জানান, তিস্তার ভাঙনে বজরা পশ্চিমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি আর রক্ষা করতে পারেনি পানি উন্নয়ন বোর্ড। সেই সাথে এখানকার আমরা ঠিকানা হারিয়েছি প্রায় অর্ধশতাধিক পরিবার।

একই এলাকার সমিরন আক্তার বলেন, ‘হামার বাড়ি নদীত যে কয়বার ভাঙে। আরো ম্যালা জনের বাড়ি ভাঙতাছে।’

নদীভাঙন কবলিত নুর আলম জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে লোকজন এসে ১৮০ মিটার খোলা জায়গায় জিও ব্যাগ ফেলবে বলে জানায়। জিও ব্যাগ ফেলে কোনো কিছু রক্ষা করা যাচ্ছে না। আমরা ত্রাণ-টাকা-পয়সা কিছুই চাই না। আমরা তিস্তা নদীতে স্থায়ীভাবে নদী প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম চাই।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, বৃষ্টির কারণে পানি বৃদ্ধি কমা-বাড়ার কারণে নদ-নদীর ৩০টি পয়েন্টে নদী ভাঙছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, বাড়িঘর নদী ভাঙনের কবলে পড়ায় আমরা দ্রুততার সাথে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। তিস্তা নদীর পশ্চিম বজরায় ভাঙন প্রতিরোধে আমরা জিও ব্যাগ ফেলার কার্যক্রম শুরু করেছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here