এই পদযাত্রা বিজয়ের যাত্রা। দেশকে মুক্ত করার বিজয় যাত্রায় শরিক হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা পরিষ্কার করে বলেছি। ১০ দফা দিয়েছিলাম। সেই ১০ দফা এখন এক দফা এনেছি। এক দফা হলো শেখ হাসিনার পদত্যাগ। এই মুহূর্তে তাকে পদত্যাগ করতে হবে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে এবং তত্ত্বাবধায়ক নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এই নির্বাচন কমিশন অযোগ্য, অথর্ব, যা হুকুম করে সরকার তাই করে।
বুধবার বিকালে বিএনপির রংপুর বিভাগীয় পদযাত্রায় প্রধান অতিখির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল।মির্জা ফখরুল বলেন, এই সমাবেশকে বানচাল করার জন্য আওয়ামী সন্ত্রাসীরা বহু চেষ্টা করেছে। দিনাজপুর শহরের রাস্তায় আসার সময় তারা হাজি মোহাম্মদ দানেশ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আমাদের গাড়িগুলোতে হামলা করে ভাঙচুর করে অসংখ্য নেতাকর্মীকে আহত করেছে। এতে প্রায় ৫০/৬০ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। অন্ধকারে অতর্কিত হামলা করে কারা-কাপুরুষেরা। যারা কাপুরুষ, যাদের সাহসের অভাব, যারা জনগণের সামনে দাঁড়াতে ভয় পায়, তারা পিছন থেকে অতর্কিত হামলা করে। তাতে কি এই সমাবেশকে ঠেকাতে পেরেছে। পারে নাই তারা। পারবে কি? যে আন্দোলন শুরু হয়েছে সে আন্দোলন থামানো যাবে কি? না। কারণ এই আন্দোলন শুধু বিএনপির আন্দোলন নয়। এই আন্দোলন কৃষক দল, শ্রমিক দল, মৎস্যজীবী দল কিংবা তাঁতী দলের নয়। এই আন্দোলন শুধু মির্জা ফখরুল, তারেক রহমান কিংবা বেগম খালেদা জিয়ার নয়-এই আন্দোলন সমগ্র বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের আন্দোলন। তাদের বেঁচে থাকার আন্দোলন। তাদের মুক্তির আন্দোলন। তাদের ভোট দেয়ার অধিকারের আন্দোলন। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া লড়াই করে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে এনেছেন। সংগ্রাম করেছেন-এখন করছেন। এখনও তিনি মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে গৃহে অন্তরীণ রাখা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই যে সংগ্রাম, এই যে লড়াই, খুবই কঠিন লড়াই। এই লড়াইটা আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। জাতির অস্তিত্বের লড়াই। আমরা টিকে থাকবো কিনা জাতি হিসেবে, স্বাধীন জাতি হিসেবে, সেটাই নির্ধারিত হবে এই লড়াইয়ের ভবিষ্যত নিয়েই।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই আওয়ামী লীগ গোটা জাতিকে দ্বিধা বিভক্ত করেছে, আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসের রাজত্ব করছে, আওয়ামী লীগ আগুন নিয়ে রাজনীতি করে, আওয়ামী লীগ গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। ২০১৮ নির্বাচনে আগের রাতে ভোট তৈরি করে জিতে গেছি বলছিল। তারা কাউকে সহ্য করতে পারে না। এমনকি হিরো আলমকে পর্যন্ত সহ্য করতে পারেনি। কি লজ্জার কি লজ্জার।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রত্যেকটা জিনিসের দাম দশগুণ-বার গুণ বেড়ে গেছে। চাল, ডাল সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে। জেগে উঠতে হবে বন্ধুগণ। জেগে উঠতে হবে আমার দেশ রক্ষার জন্য। জাতিকে রক্ষার জন্য। সর্বপরি আমার দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আমাকে জেগে উঠতে হবে।
জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসন জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়াপার্সনের বিশেষ সহকারী সামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, তাঁতীদলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।