বৃষ্টির অজুহাতে কেজিতে ১৫-২০ টাকা বাড়লো সবজির দাম

0
77

ঢাকা: রাজধানীর বাজারগুলোতে গত দুদিনের ব্যবধানে বেড়েছে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম। দুয়েকটি সবজি ছাড়া বেশিরভাগ সবজি কেজিতে প্রায় ১৫-২০ টাকা দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।কারণ হিসেবে বৃষ্টিকেই দুষছেন তারা। তবে এটাকে বিক্রেতাদের অজুহাত হিসেবে দেখছেন ক্রেতারা।

সোমবার (১৪ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বর্তমানে প্রতিকেজি বরবটি ৯০ টাকা, গোল বেগুন ৮০-৮৫ টাকা, লম্বা বেগুন ৫৫-৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৫০ টাকা, ঝিঙা ৬০-৬৫ টাকা, ধুন্দল ৭০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, শসা ৭০-৭৫ টাকা, কচুর মুখি ৭০-৮০ টাকা, লতি ৭০-৭৫ টাকা, পেঁপে ৪০-৪৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা, পাকা টমেটো ২৩০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, গাজর ১৩০ টাকা, শিম ২০০-২১০ টাকা, কাঁচামরিচ ১৮০ টাকা, উস্তা ও করলা ৮৫-৯০ টাকা, মুলা ৫০-৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতিপিস ফুলকপি ৩০-৪০ টাকা, বাঁধাকপি ৩৫-৫০ টাকা, কাঁচাকলার হালি ২৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বৃষ্টির কারণে মাঠে সবজি নষ্ট হওয়ায় এবং বাজারে সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বেড়েছে বলে দাবি করছেন বিক্রেতারা।

জাকির হোসেন নামে কারওয়ান বাজারের এক সবজি বিক্রেতা বলেন, বর্তমানে সবজির দাম কিছুটা বেশি। বৃষ্টির কারণে অনেক সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। যার কারণে বাজারে সবজির সরবরাহ কম। দামও তুলনামূলক বেশি। গত দুদিনে কেজিতে ১৫-২০ টাকা বেড়েছে সব সবজির দাম।

তিনি বলেন, আজ পাকা টমেটো আর কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কম। গত রোববার (১৩ আগস্ট) প্রতিকেজি পাকা টমেটো ৩০০ টাকা ও কাঁচামরিচ ২২০ টাকা বিক্রি করেছি। বৃষ্টি বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত সবজির দাম আর কমবে না। বৃষ্টি বন্ধ হওয়ার এক সপ্তাহ পর থেকে সবজির দাম কমতে পারে।

একই কথা বলছেন আলমগীর নামে আরেক বিক্রেতা। তিনি বলেন, বৃষ্টির কারণে এক ধাক্কায় সবজির দাম অনেকখানি বেড়েছে। এ ধাক্কা ১৫ দিন থাকবে। তারপর বৃষ্টি বন্ধ হলে দাম কমতে পারে।

তবে ক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টি শুধু অজুহাত। বিক্রেতারা সুযোগ পেলেই নিজ থেকে দাম বাড়িয়ে দেয়।  

মামুন হোসাইন নামে এক বেসরকারি চাকরিজীবী বলেন, আমাদের দেশের সমস্যা যেখানে উৎপাদন হয়, সেখান থেকে কোনো একটি জিনিসের দাম বাড়তে পারে বললেই দোকানে সঙ্গে সঙ্গে দাম বেড়ে যায়। এরপর আর কমে না। এজন্য রোদ-বৃষ্টি লাগে না। এখন সবজির দাম বাড়ার পেছনে বিক্রেতারা বৃষ্টিকে দায়ী করছেন। কিন্তু এটা শুধু তাদের অজুহাত। তারা মানুষের কথা ভাবে না।

তিনি বলেন, আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরি করি। গত তিন বছর আমার বেতন বাড়েনি। কিন্তু জিনিসপত্রের দাম দ্বিগুণ-তিনগুণ বেড়েছে। এতে সংসারে টানাটানি শুরু হয়েছে। এখন আমাকে সংসার চালাতে হয় অতিরিক্ত কিছু করতে হবে, না হয় ধার করে চলতে হবে। অথবা কেনাকাটা কমাতে হবে।

শামসুদ্দিন নামে আরেক ক্রেতা বলেন, জিনিসপত্রের দাম বাড়লে আমাদের ওপর যে কী প্রভাব পড়ে সেটি বলে বোঝানো যাবে না। বাজারে এলে লিস্টের অনেক জিনিস না কিনেই ফিরে যেতে হয়।

বৃষ্টির অজুহাতে শুধু সবজির দামই বাড়েনি, বেড়েছে শাকের দামও। প্রায় প্রতিটি শাকের আঁটিতে ৫-১০ টাকা দাম বেড়েছে। বর্তমানে কারওয়ান বাজারে প্রতিআঁটি লাল শাক বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা, ডাটা শাক ৩০ টাকা, লাউর শাক ৩০ টাকা, পুঁই শাক ৩০ টাকা, মুলার শাক ২০ টাকা ও কলমির শাক ১০ টাকা।

এছাড়া প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ৮০ টাকা, আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ টাকা, আলু ৪০-৪৫ টাকা, দেশি রসুন ২৪০ টাকা, চীন থেকে আমদানি করা রসুন ২২০ টাকা, আমদানি করা মিয়ানমারের আদা ২০০ টাকা ও ইন্দোনেশিয়ার আদা ২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here