ওসমানী হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি অব্যাহত

0
73

সিলেট: রোগীর মৃত্যু নিয়ে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্বজনদের হামলা ও ভাঙচুরের প্রতিবাদে কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। বুধবার (২৩ আগস্ট) দুপুর ১২টা পর্যন্ত কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।

মঙ্গলবার (২২ আগস্ট) বিকেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ তথ্য জানান ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সীমান্ত মজুমদার

তিনি বলেন, বৈঠকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। বুধবার দুপুরের মধ্যে নিরাপত্তার দৃশ্যমান উন্নতির আশ্বাস দেন হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুব আলম ভুঁইয়া। যদি চিকিৎসকদের নিরাপত্তার উন্নতি পরিলক্ষিত হয়, তাহলে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হবে। এদিকে কর্মবিরতির কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা রোগীরা। এছাড়া বহির্বিভাগেও রোগী দেখছেন না চিকিৎসকরা।

মঙ্গলবার সরেজমিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, স্বজনদের অনেকে রোগীর সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে বেসরকারি হাসপাতালে চলে যাচ্ছেন। এছাড়া হাসপাতালের বহি:বিভাগে চিকিৎসা না দেওয়ার কারণে ১০ টাকার টিকিট কাউন্টার বন্ধ রাখা হয়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা অনেকে অপেক্ষমাণ থেকে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ত্যাগ করতে দেখা গেছে।

 হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রোববার (২০ আগস্ট) কুচাই শ্রীরামপুর নোয়াগাওয়ে বাতির আলীর ছেলে শাহাব উদ্দিনকে (৪০) মস্তিস্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে হাসপাতালের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের ১৯ নম্বর শয্যায় ভর্তি করা হয়। সোমবার (২১ আগস্ট) বিকেলে সাড়ে ৪টার দিকে তিনি মারা যান। এ ঘটনা নিয়ে রোগীর স্বজনরা ওই ওয়ার্ডে ইন্টার্ন চিকিৎসক ও নার্সদের ডিউটি রুমে ভাঙচুর করেন। রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তোলে স্বজনরা ওয়ার্ডের গ্লাস, চেয়ার, টেবিল, দরজা ও ইজিসি মেশিনসহ কিছু চিকিৎসা সরঞ্জাম ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে হাসপাতাল ক্যাম্প পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং চারজনকে আটক করে।

রোগীর স্বজনদের আক্রমণের মুখে চিকিৎসক ও নার্সরা ওই ওয়ার্ড ত্যাগ করে চলে যান। এ ঘটনার প্রতিবাদে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা ধর্মঘটের ডাক দেন।

হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভুঁইয়া বলেন, কর্মবিরতি চললেও বিভিন্ন ওয়ার্ডে মিড লেভেল থেকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ‘কর্মবিরতি প্রত্যাহার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। শিগগিরই এই পরিস্থিতির সমাধান হবে আশাবাদী তিনি।

এছাড়া রোগীর মৃত্যু ইস্যুতে ভাঙচুরকারীদের চারজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের হাসপাতালের পক্ষে ওয়ার্ডমাস্টার রওশন হাবিব বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে এসএমপির কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন।

মামলার আসামিরা হলেন- মহানগরের মোগলাবাজার থানাধীন কুঁচাই নোয়াগাঁওয়ের শাহাব উদ্দিনে ছেলে জুবেল আহমদ (২৭), তার সহোদর জুয়েল আহমদ (২৩) ও সাবেল আহমদ (২১) এবং তাদের চাচা একই গ্রামের বাতির আলীর ছেলে আব্দুল মালেক (৫৪)।  

সিলেট মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, হাসপাতালে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত  চার আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here