সরকারের পদত্যাগ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের ১ দাবিতে বিরোধী দলসমূহের ডাকা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধে আজ রবিবার সকাল সাড়ে ১১টায় পল্টনে আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে থেকে মিছিল শুরু করে পল্টন মোড়, নাইটিংগেল মোড় ঘুরে আল রাজী কমপ্লেক্সের সামনে এসে শেষ হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে নুরুল হক নুর বলেন, গত ৫২ বছরে এদেশে এমন স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল-অবরোধ পালন হয়নি। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে দেশের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই অবরোধ পালন করছে। আপনারা দেখেছেন আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে হরতালের নামে দোকানপাট ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, গানপাউডার দিয়ে মানুষ হত্যা করে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছিল।
কিন্তু আমরা সেই সহিংস আন্দোলন করছি না, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল-অবরোধ করছি। সরকার প্রধানের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।
তিনি আরো বলেন, এই হৃদয়হীন অমানবিক সরকার যুক্তি-তর্কে না পেরে যে বিরোধী দলকে গালিগালাজ করছে, হিংসাত্মক কথা বলছে। হরতালের আগে থেকেই ডিমের হালি ৫২ টাকা, পিয়াজ ১০০ টাকা দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি।
সরকারের পতন না হলে জিনিসপত্রের দাম আরো বাড়বে এমনকি দেশে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। তাই জনগণকে আহ্বান জানাব আপনারা রাস্তায় নামুন ,রাস্তার নেমে সরকারের পতন ঘটান।
এই আন্দোলন দেশের অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলন উল্লেখ করে নুর বলেন, এই আন্দোলন মানুষের ভোট-ভাত ও খেয়ে পড়ে বেঁচে থাকার আন্দোলন। সরকারের পতন না হলে দেশ একটি ব্যর্থ ও পঙ্গু রাষ্ট্র পরিণত হবে।
দলের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, ২৮ অক্টোবর থেকে গণঅধিকার পরিষদ রাজপথে লাগাতার আন্দোলন করে যাচ্ছে। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে বানচাল করতে আওয়ামী লীগ মোড়ে মোড়ে পাহারা বসিয়েছে, ভিন্নমতের মিছিলে হামলা করছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আওয়ামী লীগের এই কাউন্টার প্রোগ্রাম স্বৈরতন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ।
তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন রাতে বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদসহ যুগপৎ আন্দোলনকারী রাজনৈতিক দলের নেতাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগ ভিন্নমতকে মাঠ থেকে সরিয়ে ফাঁকা মাঠে ১৪ সালের মতো নির্বাচন করতে মরিয়া।
কিন্তু এইবার আন্তর্জাতিক বিশ্বও সোচ্চার।
ইতিমধ্যে আমেরিকা, ইউরোপ, জাতিসংঘ সোজাসাপ্টা জানিয়ে দিয়েছে তারা বাংলাদেশে অংশগ্রহণমূলক, অবাধ-সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের দাবির সাথে তাদের দাবির কোনো তফাৎ নেই। সুতরাং আওয়ামী লীগ যতই চেষ্টা করুক, তারা আর ক্ষমতায় থাকতে পারবে না। জনগণের যে গণআন্দোলনের মাধ্যমেই আওয়ামী বাকশালতন্ত্রের পতন হবে, জনগণের মুক্তি মিলবে। গণঅধিকার পরিষদ যতক্ষণ না পর্যন্ত সরকারের পতন হচ্ছে, জীবন বাজি রেখে আন্দোলন চালিয়ে যাবে, ইনশাআল্লাহ। দেশের জনগণকে শান্তিপূর্ণ এই গণআন্দোলনে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানাই।
বিক্ষোভ মিছিলে আরো উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, শাকিল উজ্জামান, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, ফাতেমা তাসনিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মামুন, রবিউল ইসলাম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও সামাজিক নিরাপত্তা সহ-সম্পাদক হেলেনা আক্তার, মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক নুরুল করিম শাকিল, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, ছাত্র অধিকার পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব, সহসভাপতি সাব্বির হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, শ্রমিক নেতা রবিন, শিপনসহ দলের নেতাকর্মীরা।