বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে পটুয়াখালীতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে কমপক্ষে ৪-৫ ফুট বৃদ্ধি পেয়েছে।এতে করে বেড়িবাঁধ ভেঙে জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলার ৬টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন ১৫ হাজার মানুষ।
কলাপাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, ‘দুপুরে জোয়ারের পানি বেড়িবাঁধ টপকে লোকালয়ে ঢুকে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। রাতে জোয়ারে পানি আরও বৃদ্ধি পেলে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ ধসে যেতে পারে। ’
যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চর আন্ডা এলাকার তুহিন হাওলাদার (৪২) জানান, তাদের পুরো এলাকাটি মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। পুরো চরে বেড়িবাঁধও নেই। যেভাবে জোয়ারের পানি বাড়ছে তাতে বড় ধরনের বিপদ হতে পারে। চর আন্ডায় প্রায় পাঁচ হাজার লোকের জন্য রয়েছে একটি মাত্র আশ্রয়কেন্দ্র।
তিনি জানান, সেখানে চার থেকে ৫০০ লোক আশ্রয় নিতে পারবে। বাকিদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে থাকবে। এছাড়া গ্রামের দক্ষিণ প্রান্তের প্রায় দুই হাজার মানুষ ইতোমধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। এছাড়া পানি তোড়ে ভেসে গেছে মাছের ঘের ও ফসলের মাঠ।
চালিতা বুনিয়া এলাকার ফারুক ফকির (৪৫) জানান, আগুনমুখা নদীর পেটের ভিতরে চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের অবস্থান। জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় স্লুইসের দক্ষিণপ্রান্ত দিয়ে জোয়ারের পানি বাধ টপকে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে মরিচের ক্ষেত, বাদাম, মিষ্টি আলুসহ রবি ফসলের মাঠ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক নূর কুতুবুল আলম জানান, প্রতিটি উপজেলায় আশ্রয় কেন্দ্রে লোক আসতে শুরু করেছে। দুপুরের পর থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত অর্ধলক্ষ লোক আশ্রয় কেন্দ্রে এসেছে। সন্ধ্যার পর লক্ষাধিক লোক আশ্রয় কেন্দ্রে চলে আসবে। দুর্গত এলাকার লোকদের স্বেচ্ছাসেবক, ইউপি সদস্য, চৌকিদার ও সমাজকর্মীদের মাধ্যমে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসার কাজ চালানো হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, যারা আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান করছেন তাদের জন্য সরকারের তরফ থেকে খাবারের ব্যবস্থা হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি কমিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছে জেলা প্রশাসন। মেডিকেল টিম, রেসকিউ টিম প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পর্যাপ্ত শুকনা খাবার, ওষুধ মজুদ রয়েছে।