নিজের ক্যারিয়ার যে শেষের পথে, সেই ইঙ্গিত আগেই দিয়েছিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। ইতোমধ্যে নিজের শেষ ইউরো ম্যাচও খেলে ফেললেন গতকাল (শুক্রবার)। টাইব্রেকারে ফ্রান্সের কাছে হেরে চলমান মহাদেশীয় এই শ্রেষ্ঠত্বের প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গেছে পর্তুগাল। তার পর থেকেই আলোচনা হচ্ছে এটাই জাতীয় দলে রোনালদোর শেষ ম্যাচ কি না। যা নিয়ে কথা বললেও, স্পষ্ট করে কিছু জানাতে পারেননি পর্তুগিজ কোচ রবার্তো মার্টিনেজ।
গতকাল ফ্রান্স-জার্মানির নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলায় হয়নি কোনো গোল। তারপর অতিরিক্ত সময়ে খেলা গড়াল। ১২০ মিনিটেও কোনো ফল না আসায় টাইব্রেকারে গড়ায় ম্যাচ। তাতে পর্তুগালকে হারিয়ে ইউরো কাপের সেমিফাইনালে উঠে গেছে ফ্রান্স। এরপর রোনালদোর অবসর নিয়ে জানতে চাওয়া হয় পর্তুগাল কোচের কাছে। সংবাদ সম্মেলনে কোচ মার্টিনেজ বলেছেন, ‘ম্যাচ শেষ হওয়ার পরপরই এটা নিয়ে কথা বলাটা একটু আগেভাগেই হয়ে যায় এবং ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে এ বিষয়ে (রোনালদোর অবসর) কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।’
একই প্রশ্ন গিয়েছিল পর্তুগিজ ডিফেন্ডার পেপের কাছেও। তিনিও নিজের শেষ ইউরো খেলেছেন, এবারের আসর খেলতে নেমেই তিনি সর্বোচ্চ বয়সী হিসেবে রেকর্ড গড়েছিলেন। জাতীয় দলে নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে ৪১ বছর বয়সী পেপে বলেন, ‘ভবিষ্যতে এটা নিয়ে কথা বলার সুযোগ পাব। এখন কথা বলতে চাই না। কারণ, লোকজন প্রক্রিয়া ভুলে আগামীকাল আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলবে।’
এদিকে, এবারের পুরো ইউরোতেই নিজের ছায়া হয়ে ছিলেন সিআরসেভেন। সবমিলিয়ে ১০টি শট নিয়েও তিনি গোলের দেখা পাননি। কেবল তাই নয়, ইউরোয় এক আসরে সর্বোচ্চসংখ্যক শট নিয়েও গোল না পাওয়ার অনাকাঙ্ক্ষিত রেকর্ডও হয়ে গেছে তার। যদিও সেই রেকর্ড হয়েছে যৌথভাবে, আগে বেলজিয়ামের কেভিন ডি ব্রুইনা করেছিলেন ভুলে যাওয়ার মতো এমন কীর্তি। সবমিলিয়ে পর্তুগালের হয়ে সর্বশেষ ৯ ম্যাচেই গোলের দেখা পাননি আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ গোলদাতা রোনালদো।
৪১ বছর বয়সী এই তারকা ষষ্ঠবারের মতো ইউরো খেলতে নেমে বলেছিলেন, ‘কোনো সন্দেহ নেই অবশ্যই এটাই শেষ (ইউরো। তবে আবেগ ছুঁয়ে যাচ্ছে না। ফুটবলের সবকিছুই আমাকে প্রভাবিত করে। খেলাটির প্রতি এখনো আমার যে উৎসাহ, দর্শকের আগ্রহ, পরিবারকে পাওয়া, লোকজনের ভালোবাসা…ব্যাপারটা আসলে ফুটবলবিশ্ব ছেড়ে যাওয়া নয়। আমার জেতার বা করার জন্য আর কীই-বা বাকি আছে?’ ফলে ২০২৬ বিশ্বকাপে রোনালদোর না খেলারই বেশি ইঙ্গিত মিলছে।
রোনালদো ইউরো খেলছেন ২০০৪ থেকে, টানা ছয়টি টুর্নামেন্ট খেলে তার নামের পাশে মোট ১৪ গোল। অথচ ইউরোয় ১০ গোলও নেই আর কারও। কিন্তু সেই তারকাই কি না এবার প্রথম কোনো বড় মঞ্চ থেকে গোলহীন হয়ে ফিরছেন। পর্তুগালের হয়ে সবমিলিয়ে ২১২ ম্যাচে রোনালদোর গোল ১৩০টি। যা আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ।