ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বৈষম্য বিরোধী ছাত্ররা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার রিয়াজ উদ্দিন ও নতুন ভবনের ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লুর রহমানের রুমে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় দুইজন ওয়ার্ড মাস্টার সহ পাঁচজনকে আটক করে শিক্ষার্থীরা।পরে তাদেরকে আনসার সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অভিযান চালিয়ে তারা ওয়ার্ড মাস্টার রিয়াজের রুম থেকে মদের বোতল,পুলিশ কেসের সিল,ধারালো অস্ত্র, বেসরকারি হাসপাতালের ভিজিটিং কার্ড, আবাসিক হোটেলের ভিজিটিং কার্ড ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তালিকা জব্দ করা হয়। এ ছাড়া ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লুর রহমান বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে হাসপাতালে কাজ করার সুযোগ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।
বৃহস্পতিবার(১৫ আগষ্ট) দুপুরে তারা জরুরী বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার রিয়াজ উদ্দিনের রুম ও জিল্লুর রহমান রুমে অভিযান পরিচালনা করে অবৈধ অনেক মালামাল উদ্ধার করে।
অভিযান পরিচালনাকারী এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা খবর পাচ্ছিলাম জরুরি বিভাগে যারা চিকিৎসা সেবা নিতে আসে তারা বিভিন্ন ধরনের হয়রানির শিকার হচ্ছিলেন। সেসবের সত্যতা নিশ্চিত আমরা জরুরী বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টার রিয়াজ উদ্দিনের রুমে অভিযান পরিচালনা করি।
অভিযানের সময় তার রুম থেকে মদের বোতল ধারালো অস্ত্র পুলিশ কেসের সিল বিভিন্ন অবৈধ আইডি কার্ড ছাত্রলীগ সহ বিভিন্ন নামের তালিকা সহ কাগজপত্র পাওয়া যায়। এ সময় তিনি স্বীকার করেন বিভিন্ন আইসিইউতে পাঠিয়ে প্রত্যেক রোগী থেকে ১ হাজার টাকা করে নেন। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন তার রুমে কেন মদের বোতল পাওয়া যাবে সে তো চিকিৎসক নয় তার কাছে কেন পুলিশ কেসে সিল পাওয়া যাবে এবং বিভিন্ন অবৈধ ছাত্রলীগ এবং অঙ্গ সংগঠনসহ বিভিন্ন নামের তালিকা কেন পাওয়া যাবে। বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের কার্ড আবাসিক হোটেলের ভিজিটিং কার্ডসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র তার কাছে পাওয়া যায়।
এসময় তার অন্যতম দুই সহযোগীকে আটক করে পরিচালকের রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে পরিচালকের নির্দেশনায় তাদেরকে আনসার সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।আমাদের দাবি এই ওয়ার্ড মাস্টারকে আমরা ঢাকা মেডিকেলে দেখতে চাই না। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আমরা পরিচালকের কাছে দাবী জানিয়েছি।
অন্য আরেক শিক্ষার্থী বলেন, নতুন ভবনের ওয়ার্ড মাস্টার জিল্লুর রহমান তিনি বিভিন্ন লোককে তিন লক্ষ টাকা করে নিয়ে বিভিন্ন লোক নিয়োগ দেন সেই অভিযোগে তাকেও ধরে আনা হয় প্রশাসনিক ব্লকে।পরে তিনি টাকা নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন এবং এরপর তাকেও আনসার সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এছাড়া নতুন ভবন থেকে আরও একজনকে আটক করা হয়।
শিক্ষার্থীরা এসব অভিযোগের ভিত্তিতে সঠিক তদন্ত দাবি করেন এবং তাদের বরখাস্ত সহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান। শিক্ষার্থীরা এসব অপকর্ম সাথে জড়িত কর্মচারীদের তারা মেডিকেলে দেখতে চান না বলে দাবি করেন পরিচালকের কাছে।
পরে পরিচালক কনফারেন্স রুমে তাদের সাথে কথা বলেন এবং তিনি বলেন, তিনি শিক্ষার্থীদের বলেন আপনারা যেসব জিনিস তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করেছেন সেগুলো আমাদের কাছে জমা দিয়ে যান এবং আমরা একটি কমিটি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।তিনি আরো বলেন,সরকারি কর্মচারীদের বিরুদ্ধে নিয়মানুসায়ী যে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার আমরা সেই ব্যবস্থাই নিব।