নিজস্ব প্রতিবেদক: টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট কীভাবে খেলতে হয়, তা নিশ্চয়ই এই সফরে ভারতের কাছ থেকে কিছুটা হলেও শিখেছে হোয়াইটওয়াশ হওয়া বাংলাদেশ দল। তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ম্যাচটি ছিলো শান্তদের জন্য চরম হতাশার। ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রীতিমত ওয়ানডে ক্রিকেটের স্কোর করেছে ২৯৭ রান। টি-টোয়েন্টিতে এই পাহাড়সম রান দেখে ঘাবরে যায় টাইগার সেনারা। ‘কুল রাখি না শ্যাম রাখি’ অবস্থার মধ্যে ব্যাটিংয়ে ভারতের মোকাবিলা করে বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টিতে ভারতের গড়া লম্বা ইনিংস দেখেই মানসিকভাবে ম্যাচ থেকে ছিটকে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ম্যাচ জিততে নাজমুল হোসেন শান্তর দলকে গড়তে বিশ্ব রেকর্ডও। কিন্তু লক্ষ্য তাড়ায় ব্যাটারদের মাঝে কোনো চেষ্টাই দেখা যায়নি। সফরকারীদের ১৩৩ রানে গুঁড়িয়ে টি টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচটিও নিজেদের করে নিয়েছে ভারত।
শনিবার (১২ অক্টোবর) হায়দরাবাদে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি টোয়েন্টিতে সাঞ্জু স্যামসনের বিধ্বংসী শতকে টেস্ট খেলুড়ে দেশগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ ২৯৮ রানের দলীয় সংগ্রহ পায় ভারত। জবাবে হতশ্রী ব্যাটিংয়ের ধারা অব্যহত রাখা বাংলাদেশের ইনিংস থামে ৭ উইকেটে ১৬৪ রানে।
পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম বলেই পারভেজ হোসেন ইমনের উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর তানজিম তামিম ও অধিনায়ক শান্ত আক্রমণের চেষ্টা করলেও একের পর এক ডট বল দেওয়ায় তা আর কাজে লাগেনি। ১২ বলে ১৫ রান করা তানজিদ ফিরলে ৩৫ রানে ভাঙে এই জুটি।
পাওয়ারপ্লের শেষ ওভারে রবি বিষ্ণোইয়ের বলে রিভার্স-সুইপ খেলতে গিয়ে উইকেটকিপারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ১১ বলে ১৪ রান করে থামেন শান্ত। তৃতীয় উইকেটে লিটন দাস ও তাওহীদ হৃদয় আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করেন। কিন্তু এই জুটি থেকে ৩৮ বলে ৫৩ রানের বেশি আসেনি। বিষ্ণোইয়ের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ২৫ বলে ৪২ রান করা লিটন ফিরলে ভাঙে এই জুটি।
জাতীয় দলের জার্সি গায়ে নিজের শেষ টি-টোয়েন্টি খেলতে নামা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ফেরেন ৯ বলে ৮ রান করে। তবে এক প্রান্ত আগলে রেখে ৩৫ বলে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ফিফটি তুলে নেন হৃদয়। পুরো সিরিজে এটিই বাংলাদেশের কোনো ব্যাটারের একমাত্র অর্ধশতক। শেষ পর্যন্ত ৪২ বলে ৫ চার ও ৩ ছক্কায় ডানহাতি এই ব্যাটার অপরাজিত থাকেন ৬৩ রান।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা ভারতীয় ব্যাটাররা চার-ছক্কার বন্যা বইয়ে দেয় শুরু থেকেই। তৃতীয় ওভারে অভিষেক শর্মার উইকেট ছাড়া বলার মতো আর কোনো অর্জন ছিল না বাংলাদেশের। এরপর পালা করে বোলারদের পিটিয়ে তুলোধুনো করেছেন স্যামসন-যাদব-পান্ডিয়ারা।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৭০ বলে ১৭৩ রানের জুটি গড়েন স্যামসন ও যাদব
৪০ বলে ক্যারিয়ারের প্রথম শতক হাঁকান স্যামসন। ১১১ রানে ডানহাতি এই ওপেনার ফিরলে ভাঙে দ্বিতীয় উইকেটে ৭০ বলে ১৭৩ রানের জুটি। সঙ্গীর বিদায়ের পর অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ফেরেন ৩৫ বলে ৭৫ রান করে। এরপর চতুর্থ উইকেটে ২৬ বলে রিয়ান পরাগকে নিয়ে পান্ডিয়া ৭০ রান যোগ করলে তিনশ’র দিকে এগুতে থাকে ভারত। কিন্তু শেষ ওভারে পান্ডিয়া ১৮ বলে ৪৭ রান করে ফিরলে তা আর হয়নি।
ব্যাটারদের তা-বে লাইন-লেন্থ হারিয়ে দিশেহারা সফরকারী বোলাররা এদিন মোট তিনটি নো বল করেন। সবকটিই এসেছে তাসকিন আহমেদের কাছ থেকে। এছাড়াও ফিল্ডিংয়েও বেশ জঘন্য ছিল পুরো দল। রান-আউটের দুটো সহজ সুযোগ হাতছাড়া করার পাশাপাশি মিস করে দুটি ক্যাচও।
টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে বাংলাদেশের বোলার মধ্যে সর্বোচ্চ ৬৬ রান দেন ৩ উইকেট শিকার করা সাকিব। পেছনে ফেলেন রুবেল হোসেনের দেওয়া ৬৩ রান।