চট্টগ্রাম নগরের জামালখানে মধ্যরাতে ছাত্রলীগের ঝটিকা মিছিলের ঘটনার পর ৩৮ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গত ২৪ ঘণ্টায় নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মিছিলে অংশ নেয়া কয়েকজন রয়েছেন বলে দাবি পুলিশের। তবে এ সংখ্যায় সন্তুষ্ট নয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মিছিলকারীসহ যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের আইনের আওতায় আনার দাবি সমন্বয়কদের।
নগর পুলিশ জানায়, বিশেষ অভিযানে ছাত্র আন্দোলনে গুলিবর্ষণকারী, শেখ হাসিনার সরকার পতন পরবর্তী নাশকতা মামলার এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় (শনিবার থেকে রোববার রাত ১০টা পর্যন্ত) নগরের ১৬ থানা এলাকা থেকে ৩৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে কয়েকজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- রাকিবুল ইসলাম, ইমরান হায়দার, মহিউদ্দিন ওরফে মাঈনুদ্দিন, বাচ্চু মিয়া, বেলাল হোসেন আজাদ, সাইমন ও টুটুল। এর মধ্যে প্রথম চারজন জামালখান এলাকায় মিছিলকারী বলে জানান নগর পুলিশের এডিসি (জনসংযোগ) কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজ।
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) মধ্যরাতে জামালখান এলাকায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমর্থনে মিছিল করেন ছাত্রলীগের অন্তত ৩০ থেকে ৩৫ জন নেতাকর্মী। এ সময় তারা ‘শেখ হাসিনার ভয় নেই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ বলে স্লোগান দিয়ে দ্রুত ঐ স্থান ত্যাগ করে চলে যান।
রাতেই ঐ মিছিলের একাধিক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে অনেককে মুখোশ পরিহিত অবস্থায় দেখা যায়। মিছিলের অগ্রভাগে ছিল কয়েকটি মোটরসাইকেলও।
ঐ ঘটনার পর শনিবার বিকেলে জামালখান এলাকায় প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নিয়ে মিছিলকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ শেষে তারা মিছিল নিয়ে দামপাড়ায় সিএমপি কমিশনার কার্যালয়ের প্রধান ফটকে অবস্থান নেন।
সেখানে তারা মিছিলকারীদের গ্রেফতারে নগর পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেন। এ সময়ের মধ্যে গ্রেফতারে ব্যর্থ হলে তিন থানার ওসিসহ (কোতোয়ালি, চকবাজার ও পাঁচলাইশ) পুলিশ কমিশনারের পদত্যাগের দাবি জানান তারা। তাদের আল্টিমেটামের সময় শেষ হয়েছে গতকাল রোববার।
এদিকে, গ্রেফতারের সংখ্যা নিয়ে সন্তুষ্ট নন বলে জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চট্টগ্রামের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ। তিনি বলেন, আজকের (সোমবার) মধ্যে ৫০ জনকে গ্রেফতার দেখতে চাই। আল্টিমেটামের মধ্যে পুলিশ প্রশাসন সবাইকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এক্ষেত্রে পুলিশ ব্যর্থ। আজ সোমবার পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব।