মাদারীপুরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাস খাদে,নিহত দুইজনের পরিচয় সনাক্ত

0
295

মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় বাস দুর্ঘটনায় নিহত দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরো ৮ জন।

রোববার (১৯ মার্চ) সকালে এই দুর্ঘটনা ঘটে।পরে গুরুতর আহত অবস্থায় ১০ জনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ(ঢামেক) হাসপাতালে জরুরী বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন।নিহতরা হলেন- শেখ আকব্বর আলী (৬৫) ও মিনহাজ বিশ্বাস (৩২)।আহতরা হলেন-
ইমামুল হোসাইন সাগর(৩৫),আব্দুল হামিম(৫৫), অমিত(২৮), শেখ ফয়সাল আহমেদ (৪০), মো বদরুদ্দোজা (৩০),পঙ্কজ দাস(৫০), ঝুমা আক্তার (৩৪), ও বুলবুল (৫০)।

নিহত আকবর আলীর ভাতিজা জাহিদুল ইসলাম জানান, আমাদের বাড়ি বাগেরহাট থানার রামপাল এলাকায়। আমার চাচা চোখের ডাক্তার দেখার জন্য ঢাকায় আসতেছিলেন। পথিমধ্যে ইমাদ পরিবহন শিবচর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছাদে পড়ে যায়। এতে আমার চাচা গুরুতর আহত হয়। খবর পেলাম আমার চাচা ঢাকা মেডিকেলে আনার পরে মারা যায়।

দুর্ঘটনাকবলিত বাসের সুপারভাইজার মিনহাজ বিশ্বাস ও যাত্রী শেখ আকব্বর আলী/ ছবি : সংগৃহীত

নিহত মিনহাজ বিশ্বাসের চাচাতো ভাই সাব্বির বলেন, আমার চাচাতো ভাই ইমাদ পরিবহনের সুপারভাইজার ছিলেন। যে পরিবহনটি দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরে আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আমরা খবর পেয়ে ঢাকা মেডিকেলে এসে তার মরদেহ সনাক্ত করি। তার বাড়ি গোপালগঞ্জ জেলার সদর থানার পুরান মানিকদা এলাকায়।

আহত ইমামুল হোসাইন সাগরের খালা রেহানা বলেন, আমার ভাগ্নে খুলনার সোনাডাঙ্গা এলাকা হতে ঢাকায় আসতেছিলেন। সে ডাচ-বাংলা ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। আহত অবস্থায় বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসাধীন আছেন।

আহত আব্দুল হামিমের ভাই সাইদুর রহমান বলেন, আমাদের বাড়ি খুলনা জেলার বটিয়াঘাটা এলাকায়। সে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে চাকরি করে। সকালে ঢাকায় আসার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়। ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগের চিকিৎসাধীন আছেন।

আহত শেখ ফয়সাল আহমেদকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তিনি এনসিসি ব্যাংকের খুলনা শাখার ম্যানেজার ছিলেন।

আহত বদরুদ্দোজার সহকর্মী এজাজ জানান, বদরুদ্দোজা আইপি ডিসি ফাইন্যান্সের আইটি ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তিনি প্রতিদিন মাদারীপুর থেকে এসেও ঢাকায় অফিস করতেন। আজকে মাদারিপুর থেকে ঢাকায় আসার সময় এই দুর্ঘটনায় তিনি আহত হন। তিনি ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসাধীন আছেন।

নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই ইমাদ পরিবহনের বাস খাদে। ছবি সংগ্রহীত

আহত ঝুমা আক্তারের ফুফাতো ভাই জুলফিকার বলেন, আমার বোনের স্বামী সৌদি প্রবাসী।সে আজ সৌদি যাওয়ার জন‍্য তার পাসপোর্ট সহ কাগজপত্র নিতে তার দেবর সজীবের সাথে গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকায় আসতে ছিল। পথিমধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় তার দেবর সজীব ঘটনাস্থলেই মারা যায় এবং আমার বোন গুরুতর আহত হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়েছে। হাসপাতালে তার চিকিৎসা চলছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।

আহত অমিতের চাচা রবিউল ইসলাম জানান, আমার ভাতিজা আইপিডিসি ফাইনান্সের এক্সিকিউটিভ হিসাবে চাকরি করতেন। মাঝেমধ্যে শুক্র-শনি ছুটিতে সে গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরে আসতেন। আজ ঢাকায় ফেরার সময় সে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন।

আহত বুলবুলের স্ত্রী মাহফুজা আক্তার বলেন, সে ঢাকায় এনার্জিপ্যাক কোম্পানিতে চাকরি করতেন। আজ গোপালগঞ্জের হরিদাসপুর এলাকা হতে ঢাকার উদ্দেশ্যে আসার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়। সে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। আমরা খবর পেয়ে ঢাকায় আসতেছি।

আহত পংকজ দাসের ভাতিজা লিটন দাস বলেন,আমার চাচা আনসার ভিডিপি উন্নয়ন ব্যাংকের মতিঝিল শাখার ম্যানেজার ছিলেন। আজ গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া থানার কান্দিগ্রাম এলাকা থেকে ঢাকায় আসার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়।

ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বসুন্ধরা নিউজ কে বলেন, মাদারীপুরের শিবচর এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ঢাকা মেডিকেলে ৯ জন এসেছিল। এদের মধ্যে দুইজনকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। আহত আটজনের মধ্যে একজনকে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেছেন। বাকি সাত জনের ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসা চলছে।চিকিৎসক জানিয়েছেন আহতদের সাত জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বসুন্ধরা নিউজ

উল্লেখ্য,মাদারীপুরের শিবচরে ইমাদ পরিবহনের বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে ২০ জন নিহত হয়েছে।

এসএএ/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here