ভয়াবহ কর্মী সংকটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে জাপান

0
247

দিন যতই যাচ্ছে, এশিয়ার দেশ জাপানে বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যাও ততই বাড়ছে। সাম্প্রতিক এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০৪০ সাল নাগাদ ১ কোটি ১০ লাখেরও বেশি শ্রমিক সংকটে পড়তে যাচ্ছে দেশটি। এতে দেশটি বড় ধরনের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে বলে গবেষণা প্রতিবেদনে ধারণা করা হচ্ছে।

গবেষণাটি পরিচালনা করেছে স্বাধীন থিংক ট্যাংক রিক্রুট ওয়ার্কস ইনস্টিটিউট। তাদের সমীক্ষা অনুসারে, ২০২৭ সাল থেকে দেশটিতে কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর হার দ্রুত কমতে পারে। মঙ্গলবার প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রমের চাহিদা স্থিতিশীল থাকা সত্ত্বেও ২০২২-৪০ সালে শ্রমিক সরবরাহ প্রায় ১২ শতাংশ কমবে। প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা জাপানের ক্রমহ্রাসমান জন্মহারের গতিরোধের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন। শিশুর জন্মহার হ্রাসের কারণ হিসেবে সামাজিক অবক্ষয়ের বিষয়টি উল্লেখ করে সতর্ক হতে বলেন তিনি। পাঁচ বছরে উচ্চদক্ষতাসম্পন্ন কর্মী তৈরি করতে এ-বিষয়ক প্রশিক্ষণের জন্য প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ইয়েন বা ৭৬৯ কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।

১২ কোটি ৬০ লাখ জনগোষ্ঠীর জাপান এরই মধ্যে কর্মী সংকটের চাপ অনুভব করতে শুরু করেছে। 

প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২০ সালের তুলনায় কর্মজীবী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ২০ শতাংশ কমে ২০৪০ সাল নাগাদ ৫ কোটি ৯৮ লাখে নামতে পারে। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী বছরের মধ্যে ট্রাকচালকদের গুরুতর ঘাটতিতে পড়তে যাচ্ছে দেশটি। কিশিদা সরকার ঘাটতি মোকাবেলার উপায় খুঁজছেন।

গবেষণায় আরও সতর্ক করা হয়েছে, পরিবহন ও নির্মাণের মতো শ্রমনিবিড় খাতগুলোয় শ্রমিকের ঘাটতি তীব্র হয়ে উঠতে পারে। বড় ধরনের প্রভাব পড়বে স্বাস্থ্যসেবা খাতেও। কেননা বয়স্ক জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে স্বাস্থ্যসেবা খাতে ক্রমবর্ধমান কর্মী চাহিদা তৈরি হবে।

প্রধান গবেষক শোতো ফুরুয়ার নেতৃত্বে সম্পাদিত এ গবেষণায় বলা হয়, বিশ্ব অর্থনীতিতে জাপানের আপেক্ষিক পতন ও বিশ্বজুড়ে চলমান বয়স্ক জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধির সংকটের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদে অভিবাসী শ্রমিক দিয়ে কর্মী ঘাটতি মেটানো কোনও কার্যকর সমাধান নয়।

এদিকে ভ্যালু ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের একটি গবেষণায় বলা হয়, গড় বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ২৪ শতাংশ অর্জন করতে ২০৪০ সালের মধ্যে জাপানে ৬৭ লাখ ৪০ হাজার বিদেশী কর্মীর প্রয়োজন পড়বে, যা ২০২০ সালের তুলনায় প্রায় চার গুণ।

জাপানের গ্রাম ও শহরের মধ্যকার পার্থক্যগুলো সময়ের সঙ্গে আরও বাড়বে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, টোকিও ছাড়া দেশের সব অঞ্চলই ২০৪০ সালের মধ্যে শ্রমিক ঘাটতির মুখোমুখি হবে। জাপানের পুরনো রাজধানী কিয়োটো প্রয়োজনের তুলনায় প্রায় ৩৯ শতাংশ শ্রমিক ঘাটতিতে পড়বে। অন্যদিকে হোক্কাইডোর উত্তর দ্বীপে এ ঘাটতির পরিমাণ হবে ৩২ শতাংশ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here