বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছেন, আমরা প্রতি মাসে ৭ থেকে ৮শ’ কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে টিসিবি’র মাধ্যমে অস্বচ্ছলদের মাঝে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য দিচ্ছি। এতে করে রমজানে মানুষের কষ্ট হলেও হাহাকার নেই। আমরা একেবারেই যে পথে বসে গেছি, দেশ চালাতে পারছি না তা কিন্তু না। আপনারা সাংবাদিকরা সেই সত্যটা জাতির কাছে তুলে ধরেন।
রবিবার সকালে রংপুর জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে বরাদ্দকৃত করোনাকালীন প্রধানমন্ত্রীর আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন বাণিজ্যমন্ত্রী।তিনি বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, আমাদের মুদ্রাস্ফীতি শতকরা ৯ ভাগ হলেও বিএনপি’র দরদের দেশ পাকিস্তানের ৩৫ ভাগ। পাগলে কি না বলে, আমি পরেরটা বলতে চাই না। আমাদের বৈশ্বিক অবস্থা জানতে হবে। ওরা যা বলে, সেটির পাশাপাশি বাংলাদেশের অবস্থানটা কি। পৃথিবীর মধ্যে আমাদের অবস্থান কোথায়।
বাণিজ্যমন্ত্রী চিলমারী নৌবন্দর প্রসঙ্গে বলেন, চিলমারী নৌবন্দর অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীও অনেক আন্তরিক। একনেকে নৌবন্দরের জন্য সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ কোটি টাকা পাস হয়েছে। জমি নিয়ে জটিলতার কারণে চিলমারী নৌবন্দরের কাজে ধীরগতি এসেছিল। বর্তমানেই সেটি কেটে গেছে। আগামী এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে নৌবন্দরের কাজ সম্পন্ন হবে। এছাড়া নদীর নাব্যতা ঠিক রাখা গেলে উত্তর-পূর্ব ভারতের প্রবেশদ্বার হিসেবে এই নৌরুট ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে করে ভৌগলিক কারণে আমরা ভারতের সেভেন সিস্টারে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়াতে পারবো। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে আমরা ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর চেষ্টা করছি।
টিপু মুনশি বলেন, উত্তরবঙ্গে কৃষি ভিত্তিক শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার খুব চেষ্টা করা হচ্ছে। স্পেনের একটি টিম স্পেন ও বাংলাদেশ যৌথ বিনিয়োগে রংপুরের বদরগঞ্জে একটি এগ্রো প্রসেসিং ইন্ডাস্ট্রি করবে। এজন্য ২৩ একর জমি দেখা হয়েছে। তারা জমি কিনে নিজেরা ভুট্টা উৎপাদন করবে পাশাপাশি স্থানীয় কৃষকদের মাধ্যমে চুক্তি ভিত্তিকভাবে ভুট্টা উৎপাদন করাবে। আমি ওদের স্পেনে গিয়ে দেখেছি, তারা গত ৪০ বছর আগে স্পেনের সবচেয়ে গরীব এলাকা ছিল, কৃষির কারণে বর্তমানে ওই এলাকা স্পেনের সবচেয়ে ধনী এলাকা। এছাড়া পঞ্চগড়ে হাসপাতাল নির্মাণ কার্যক্রমে এসে চীনের অ্যাম্বাসেডরের সাথে কথা হয়েছে। তারাও উত্তরবঙ্গে কৃষি ভিত্তিক শিল্পকারখানা গড়ে তুলতে অনেক আগ্রহী।
টিপু মুনশি আরও বলেন, সামনের দিনগুলো আমাদের দেশের ও উত্তরবঙ্গের জন্য বড় সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যত। বগুড়া থেকে রংপুর হয়ে গ্যাস লাইন সৈয়দপুর পর্যন্ত চলে গেছে। আগামী ২ থেকে ৩ বছরের মধ্যে দেশের টার্গেট এলাকা হবে উত্তরবঙ্গ।
রংপুর জেলা প্রশাসক ড. চিত্রলেখা নাজনীনের সভাপতিত্বে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) আবু জাফর, জেলা পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী চৌধুরী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এডব্লিউএম রায়হান শাহ, পীরগাছা উপজেলা চেয়ারম্যান আবু নাসের মো. শাহ মাহবুবার রহমান, রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুব রহমানসহ গণমাধ্যম কর্মীরা।