তফসিল ঘোষণার সপ্তাহ পার হলেও সিটি নির্বাচনের আমেজ নেই বরিশালে

0
93

তসিফল ঘোষণার সপ্তাহ পার হয়ে গেলেও নির্বাচনী আমেজ নেই বরিশালে। ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা বিলবোর্ড-ব্যানার পোস্টারে একতরফা প্রচারনা শুরু করলেও জনসাধারণের মাঝে তেমন আলোচনা নেই বিসিসি নির্বাচন নিয়ে। ঈদের পর বিভিন্ন দলের মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থী চূড়ান্ত হলে নির্বাচন জমে উঠতে পারে বলে আশা নাগরিকদের। সরকার বিরোধী নেতাদের দাবি বিগত নির্বাচনে সরকারের জবরদস্তির কারণে আগ্রহ নেই ভোটারদের। তবে ঈদের পর প্রার্থী চূড়ান্ত হলে প্রচারণা তুঙ্গে উঠবে দাবি আওয়ামী লীগের। 

বহু জল্পনা-কল্পনার পর গত ৩ এপ্রিল বরিশাল সহ দেশের ৫টি সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী বরিশাল সিটি করপোরশনের ভোট আগামী ১২ জুন। মনোনয়ন জমা দেয়ার শেষ দিন ১৬ মে। ১৮ মে বাছাই এবং ২৫ মে পর্যন্ত মনোনয়ন প্রত্যাহারের সুযোগ পাবেন প্রার্থীরা। ২৬ মে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেবেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে এলেও আগের মতো আমেজ নেই জনসাধারণের মাঝে। নেই নির্বাচনী ছুটোছুটি কিংবা উত্তেজনা। রোজার কারণে নির্বাচনী আমেজে কিছুটা ভাটা পড়েছে দাবি অনেকের। কেউ কেউ বলছেন বিভিন্ন দলের প্রার্থী চূড়ান্ত হলে নির্বাচনী উত্তাপ বাড়বে। সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশে এবারের ভোট হবে আশা ভোটারদের। 

অন্যান্য দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা চুপ থাকলেও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বর্তমান মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর পক্ষে বিলবোর্ড, ব্যানার আর ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে পুরো নগরী। আওয়ামী লীগের আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী মহানগর যুবলীগ যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুনের পক্ষেও পোস্টারে ছেয়ে গেছে নগরী। সাদিক ও মামুন ছাড়াও দুইজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছে আওয়ামী লীগের। অপর দুইজন হলেন বর্তমান মেয়র সাদিকের চাচা আবুল খায়ের খোকন সেরনিয়াবাত এবং মহানগর ছাত্রলীগের অপসারিত সাবেক সভাপতি জসিম উদ্দিন। নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীনদের আগ্রহ তুঙ্গে থাকলেও উল্টোটা বিরোধীদের ক্ষেত্রে। 

আমেজ না থাকার বিষয়ে বিসিসি’র গত নির্বাচনে পরাজিত মেয়র প্রার্থী বাসদ নেতা ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, গত নির্বাচন বিতর্কিত হওয়ার পরও সেই নির্বাচন বাতিল করেনি নির্বাচন কমিশন। বর্তমান নির্বাচন কমিশনও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম নয়। এই পরিস্থিতিতে এবারও ভোট সুষ্ঠু হবে না বলে আশংকা ভোটারদের। এ কারণে এই নির্বাচন নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই ভোটারদের। সুষ্ঠু‚ ভোট না হলে বাসদ ওই নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে তিনি জানান। 

জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, বিগত দিনে সরকারের জবরদস্তিমূলক আচরণের কারণে এবারের নির্বাচন নিয়েও মানুষের মাঝে হতাশা আছে। তাদের ধারনা এবারও সরকারী দল জোর করে মেয়র পদ নিয়ে যাবে। এ কারণে এবারের নির্বাচন নিয়ে জনগণের মাঝে কোন আগ্রহ নেই বলে দাবি তার। 

এবারের বিসিসি নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছেন বিএনপি’র বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক বিলকিস জাহান শিরিন। তিনি বলেন, এই নির্বাচন নিয়ে জনগণের মাঝে কোন আমেজ থাকার কথা নয়। তারা জানেন কোনো ভোট হবে না। সরকারি দল জবরদস্তি করে সব নিয়ে যাবে। বরিশালের মানুষ আওয়ামী লীগকে বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগের এই ভোটের প্রতি তাদের কোন আগ্রহও নেই বলে জানান বিএনপি’র সাবেক সংরক্ষিত এমপি শিরিন। 

বিএনপি মুখে না বললেও, বিএনপি’র প্রায়ত সাবেক মেয়র আহসান হাবিব কামালের একমাত্র ছেলে কামরুল আহসান রূপন স্বতন্ত্র নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন। এ লক্ষ্যে বিএনপি’র হাইকমান্ড সহ বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ রাখছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সদস্য রূপন। 

এদিকে মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত হলে ঈদের পর প্রচার প্রচারনা তুঙ্গে উঠবে এবং নির্বাচনী উত্তাপ ছড়িয়ে পড়বে বলে আশা মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আফজালুল করীমের। এবারের সিটি নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে বলে ধারনা করছেন তিনি। 

বরিশাল সিটি করপোরেশনের গত নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র ছিলো ১২৩টি। বিসিসিতে ভোটার ২ লাখ ৭৪ হাজার ৪শ’ ৭ জন। তবে ভোটার এবং ভোট কেন্দ্র হালনাগাদ হচ্ছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন অফিস।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here