ঢাকা মেডিকেল কলেজ(ঢামেক) হাসপাতালের ২১২ থেকে বেসরকারি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আই সি ইউ) পাঠানো নিয়ে ম্যাট-৫ এর ডা.মনি ও দালাল আলমগীর মধ্যে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়েছে। পরে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) বিকালের দিকে ঢামেক হাসপাতালের ২১২ এর অপারেশন থিয়েটারের সামনে এই ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আনসারের সহকারী প্লাটুন কমান্ডার (এপিসি) মোঃ মতিউর রহমান বলেন, ২১২ তে একটি ঘটনা ঘটে বলে আমরা সংবাদ পাই। সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রোগী ব্যতীত অতিরিক্ত যারা ছিল তাদের সবাইকে বের করে দেই।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, আই সি ইউতে রোগী পাঠানো নিয়ে ডাক্তার ও দালালদের মধ্যে ঝগড়ার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। পরে আমরা সবাইকে ২১২ থেকে বের করে দেই। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
জানা যায়,গত ২৬ এপ্রিল বৃষ্টি(২৫) নামে এক রোগী গাইনি সমস্যা নিয়ে শরীয়তপুরের নড়িয়া থেকে এসে ঢাকা মেডিকেলের ২১২ তে ভর্তি হন। রোগীর অবস্থা খারাপ হওয়ায় ম্যাট ৫ এর ডা.মনি তাকে আই সি ইউতে রেফার্ড করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, বৃষ্টি নামে ঐ রোগীকে ম্যাট ৫ এর ডা. মনি টিজি হাসপাতালে পাঠানোর জন্য ডা মাহফুজের হাসপাতালের দালাল নোবেলকে ডাকতে থাকেন। পরে ওইখানে উপস্থিত সুপার হাসপাতালের মালিক হেদায়েতুল্লাহ সরকারের মার্কেটিং এর আলমগীর বাধা দেয়। আলমগীর বলেন আপনি ডাক্তার হয়ে কেন টিজি হাসপাতালে পাঠাচ্ছেন। রোগীর যেখানে ইচ্ছা সেখানেই রোগী যাবে। এরপর ডাক্তার মনি বলেন আপনারা কি আমাদের কিছু দেন আমরা আপনাদের কেন রোগী দিব। এই নিয়ে দালাল ও ডাক্তারের মধ্যে বাক-বিতণ্ডা হয়। এ সময় টিজি হাসপাতালের দালাল নোবেল উপস্থিত ছিলেন। পরে পুলিশ ও আনসার দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে ওই রোগী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।
তিনি আরো বলেন, একজন ডাক্তার কেন দালালি করে বেসরকারি হাসপাতালে কমিশনের লোভে রোগীদের পাঠাবে। তার কাজ রোগীকে আই সি ইউতে রেফার্ড করা। রোগীর যেখানে ভালো লাগে রোগী সেখানে যাবে। ডাক্তার মাহফুজের টিজি হাসপাতালে পাঠানোর জন্য এখানের ম্যাট ৫ এর চিকিৎসকরা উদগ্রীব হয়ে থাকেন।কি তাদের স্বার্থ কেনই বা তারা এই হসপিটালে পাঠাতে চান।এছাড়া হাসপাতালের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি তারা যেন বিষয়টি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান,ঢামেক হাসপাতালের ২১২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পরিচয় ধারি কয়েকটি গ্রুপ এখান থেকে রোগী ভগিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে রোগীর চিকিৎসায় স্বল্প টাকা ব্যয়ের কথা থাকলেও রোগী ভাগিয়ে পর মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেয় এই চক্রটি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ২১২ নাম্বার ওয়ার্ডের কয়েকজন কর্মচারী বলেন,এখান থেকে রোগী বিভিন্ন বেসরকারী আইসিইউতে নেওয়ার ক্ষেত্রে দালালদের কাছ থেকে কমিশনের বিনিময়ে বিভিন্ন ম্যাটের চিকিৎসকরা তাদের সহায়তা করে বলে জানান তারা।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ঢামেক হাসপাতালের ২১২ এর চিকিৎসক ডা.মনি এর মুঠোফোনে কল দেয়া হয়। তিনি সাংবাদিকের কাছে ঘটনার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এসএএ/