ঘূর্ণিঝড়: জেনে নিন কোন সংকেতের কী অর্থ?

0
59

দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’য় পরিণত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরকে দুই নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

সমুদ্রে ঝড় সৃষ্টি হলে আবহাওয়া অফিস থেকে উপকূল সংশ্লিষ্ট এলাকায় বিভিন্ন সংকেত পাঠিয়ে সর্তক করা হয়। ১ থেকে ১১ পর্যন্ত নম্বর আর সংকেত দিয়ে বোঝানো হয় বিপদ, মহাবিপদ বা ঝড়ের ভয়াবহতার কথা। আসুন জেনে নেওয়া যাক ঘূর্ণিঝড়ের কোন সংকেতের কী অর্থ?


সমুদ্রবন্দরের জন্য ১১টি সংকেত

১নং দূরবর্তী সতর্ক সংকেত: এর অর্থ হল জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার পর দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার সম্মুখীন হতে পারে। দূরবর্তী এলাকায় একটি ঝড়ো হাওয়ার অঞ্চল রয়েছে, যেখানে বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৬১ কিমি, যা সামুদ্রিক ঝড়ে পরিণত হতে পারে।

২নং দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত: দূরে গভীর সাগরে একটি ঝড় সৃষ্টি হয়েছে। যেখানে বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিমি। বন্দর এখনই ঝড়ে কবলিত হবে না। তবে বন্দর ত্যাগকারী জাহাজ পথিমধ্যে বিপদে পড়তে পারে।

৩নং স্থানীয় সতর্ক সংকেত: বন্দর ও বন্দরে নোঙর করা জাহাজগুলো দুর্যোগকবলিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বন্দরে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে এবং ঘূর্ণি বাতাসের একটানা গতিবেগ ৪০-৫০ কিমি হতে পারে।

৪নং স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত: বন্দর ঘূর্ণিঝড় কবলিত। বাতাসের সম্ভাব্য গতিবেগ ঘণ্টায় ৫১-৬১ কিমি। তবে ঘূর্ণিঝড়ের চূড়ান্ত প্রস্তুতি নেওয়ার মতো তেমন বিপদজনক অবস্থা এখনও আসেনি।

৫নং বিপদ সংকেত: বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার ঝঞ্জাবহুল এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিমি। ঝড়টি বন্দরকে বাম দিক রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৬নং বিপদ সংকেত: বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার ঝঞ্জাবহুল এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিমি। ঝড়টি বন্দরকে ডান দিক রেখে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৭নং বিপদ সংকেত: বন্দর ছোট বা মাঝারি তীব্রতার ঝঞ্জাবহুল এক সামুদ্রিক ঝড়ের কবলে নিপতিত। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২-৮৮ কিমি। ঝড়টি বন্দরকে উপর বা কাছ দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।

৮নং মহাবিপদ সংকেত: বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ো বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিমি বা তার ঊর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে বাম দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

৯নং মহাবিপদ সংকেত: বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ো বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিমি বা তার ঊর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরকে ডান দিকে রেখে উপকূল অতিক্রম করবে।

১০নং মহাবিপদ সংকেত: বন্দর প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার ঝঞ্জাবিক্ষুব্ধ ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়তে পারে। ঝড়ো বাতাসের একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিমি বা তার ঊর্ধ্বে হতে পারে। প্রচণ্ড ঝড়টি বন্দরের উপর বা নিকট দিয়ে উপকূল অতিক্রম করবে।

১১নং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন সংকেত: আবহাওয়া বিপদ সংকেত প্রদানকারী কেন্দ্রের সঙ্গে সব যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং স্থানীয় কর্মকর্তা আবহাওয়া অত্যন্ত দুর্যোগপূর্ণ বলে মনে করেন।

নদীবন্দরের জন্য ৪টি সংকেত

১নং নৌ সতর্কতা সংকেত: বন্দর এলাকা ক্ষণস্থায়ী ঝড়ো আবহাওয়ার কবলে নিপতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিমি গতিবেগের কালবৈশাখী ক্ষেত্রেও এই সংকেত প্রদর্শিত হয়। এই সংকেত আবহাওয়ার চলতি অবস্থার উপর সতর্ক নজর রাখারও তাগিদ দেয়।

২নং নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত: বন্দর এলাকা নিম্নচাপের সমতূল্য তীব্রতার একটি ঝড়, যার গতিবেগ ঘণ্টায় অনুর্ধ্ব ৬১ কিমি বা একটি কালবৈশাখী ঝড়, যার বাতাসের গতিবেগ ৬১ কিমি বা তদুর্ধ্ব। নৌযান এদের যে কোনটির কবলে নিপতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৬৫ ফুট বা তার কম দৈর্ঘ বিশিষ্ট নৌযানকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে।

৩নং নৌ বিপদ সংকেত: বন্দর এলাকা ঝড়ে কবলিত। ঘণ্টায় সর্বোচ্চ একটানা ৬২-৮৮ কিমি পর্যন্ত গতিবেগের একটি সামুদ্রিক ঝড় সহসাই বন্দর এলাকায় আঘাত হানতে পারে। সব নৌযানকে অবিলম্বে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ করতে হবে।

৪নং নৌ-মহাবিপদ সংকেত: বন্দর এলাকা একটি প্রচণ্ড বা সর্বোচ্চ তীব্রতার সামুদ্রিক ঝড়ে কবলিত এবং সহসাই বন্দর এলাকায় আঘাত হানবে। ঝড়ে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিমি বা তদুর্ধ্ব। সব ধরনের নৌযানকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে হবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here