কয়েকটি দলকে তাদের সমাবেশের জন্য অনুমতি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক।
তিনি বলেন, ‘সমাবেশ করার জন্য আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ এ পর্যন্ত মোট ৯টি রাজনৈতিক দলের আবেদন পেয়েছি। আমরা পর্যালোচনা করে, কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে কয়েকটি দলকে তাদের সমাবেশের জন্য অনুমতি দিব।’
বুধবার (২৬ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে রাজধানী হোসনি দালানে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার
গোলাম ফারুক আরও বলেন, ‘যারা সমাবেশের জন্য অনুমতি পাবেন, রাজনৈতিক সমাবেশ করা তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) দায়িত্ব এবং কর্তব্য। আপনাদের (সাংবাদিক) মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দলের প্রতি অনুরোধ করব, এই যে ওয়ার্কিং ডে-তে বিশাল বিশাল সমাবেশ করে লাখ লাখ মানুষকে রাস্তায় যানজটে আটকে রাখা, সেই জিনিসটা মাথায় রেখে তারা যেন ভবিষ্যতে ওয়ার্কিং ডের কর্মসূচিগুলো পরিবর্তন করে বন্ধের দিনে নিয়ে যান। যারা সমাবেশস্থলে আসবেন, তারা যেন কোনোভাবেই লাঠিসোঁটা নিয়ে না আসেন, কোনো ব্যাগ নিয়ে না আসেন, যেখানে বিস্ফোরক দ্রব্য থাকতে পারে।’
উল্লেখ্য, রাজধানী ঢাকায় বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) মহাসমাবেশ ডেকেছে বিএনপি। সরকার পতনের একদফা দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে ঢাকায় এ মহাসমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে দলটি। সেই ২৭ তারিখেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও দেওয়া হয়েছে পাল্টা কর্মসূচি। যদিও তারা এটাকে পাল্টা সমাবেশ নয় বরং ‘শান্তি সমাবেশ’ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া কর্মসূচি দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও।
বিএনপির মহাসমাবেশ
২৭ তারিখের মহাসমাবেশকে ঘিরে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে নেওয়া হচ্ছে ব্যাপক প্রস্তুতি। এ উপলক্ষে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) দলটির যৌথসভাও অনুষ্ঠিত হয়। এতে কেন্দ্রীয় নেতারা দিকনির্দেশনা দিয়েছেন। বৈঠক সূত্র জানায়, মহাসমাবেশ সফল করতে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে।
এই মহাসমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা হবে জানিয়ে পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়েও নেতাকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। সমাবেশের দিনে কোথাও বাধা-বিঘ্নের ঘটনা ঘটলে নেতাকর্মীদের কী করণীয় হবে তাও বলে দেওয়া হয়েছে বৈঠকে।
মঙ্গলবার বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও লন্ডন থেকে ফেসবুকে এক লাইভ বার্তায় ২৭ তারিখের মহাসমাবেশে জনসাধারণকে অংশগ্রহণ করার জন্য এবং সমাবেশকে সফল করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন।
২৭ তারিখ ঢাকায় ইসলামী আন্দোলনের সমাবেশ
ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও ২৭ জুলাই ঢাকায় প্রতিবাদ সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে। বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে দলের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি ফয়জুল করিমের বক্তব্য প্রদানকালে পুলিশের বাধা ও অসৌজন্যমূলক আচরণের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি ঘোষণা দেয় ইসলামী আন্দোলন। ওইদিন দুপুর আড়াইটায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট সংলগ্ন স্থানে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছে তারা।
ভিপি নুরের হুমকি
২৭ তারিখ থেকে ট্রেইলার দেখবেন বলে ঘোষণা করেছেন ডাকসুর সাবেক ভিপি ও বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর। রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন না দেওয়ায় নির্বাচন কমিশন ঘেরাওয়ের কর্মসূচিতে পুলিশি বাঁধার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, ‘আজ পিছু হটলেও আগামীকাল থেকে হটব না। এ সরকারের মরণঘণ্টা বাজাব। আরও ট্রেইলার দেখবেন ২৭ তারিখ থেকে। আমরা এখন চূড়ান্ত দফারফার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছি। এতদিন যা দেখেছেন ট্রেইলার, এখন ফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হবে। এ ফাইনাল খেলায় যারাই সামনে পড়বে ফুটবলের মতো উড়িয়ে দিতে হবে।’
আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ
২৭ তারিখে বিএনপির সমাবেশ ঘিরে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকেও দেওয়া হচ্ছে পালটা কর্মসূচি। এদিন শান্তি সমাবেশ ডেকেছে আওয়ামী লীগের তিন সংগঠন। বৃহস্পতিবার জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ।