রোনালদোর হাত ধরেই সৌদি লিগের পরিবর্তন শুরু: নেইমার

0
93

ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো যখন সৌদি আরবের ফুটবলে নাম লিখিয়েছিলেন, ভ্রু কুঁচকে তাকিয়েছিলেন অনেকেই। অনেকের জন্য তা ছিল হাসি আর তাচ্ছিল্যের খোরাক। স্রেফ কয়েক মাসের ব্যবধানে এখন সেই সৌদি লিগই তোলপাড় ফেলে দিয়েছে ফুটবল বিশ্বে। রোনালদোকে ঘিরে বদলে যাওয়া সেই বাস্তবতাই মনে করিয়ে দিলেন নেইমার। ব্রাজিলিয়ান এই তারকার মতে, রোনালদোর হাত ধরেই বিশ্ব ফুটবলের প্রায় অচেনা আঙিনা থেকে সৌদি আরব হয়ে উঠেছে আকর্ষণীয় ঠিকানা।

ইউরোপের ফুটবল ছেড়ে একের পর এক তারকার সৌদি ফুটবলে যোগ দেওয়ার যে মিছিল, সেই তারকারাজিতে সবশেষ সংযোজন নেইমার। দুই বছরের চুক্তিতে পিএসজি ছেড়ে আল হিলালে যোগ দিয়েছেন ৩১ বছর বয়সী এই ব্রাজিলিয়ান। ক্যারিয়ারের এই নতুন অধ্যায়ে প্রথম সাক্ষাৎকারে বুধবার (১৭ আগস্ট) নেইমার বললেন, রোনালদোর সৌজন্যেই সৌদি ফুটবল নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলে গেছে অনেকের। তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি, ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো এই সবকিছু শুরু করেছেন। সবাই তখন তাকে বলেছিল ‘পাগল’ এবং ‘এটা সেটা’ আরও নানা কিছু। আজকে দেখুন, এই লিগ শুধু উন্নত থেকে আরও উন্নত হচ্ছে, পরিধি বেড়েই চলেছে।

ইউরোপিয়ান ফুটবল ছেড়ে আড়াই বছরের চুক্তিতে গত জানুয়ারিতে আল নাস্‌রে ক্যারিয়ারের নতুন অভিযান শুরু করেন রোনালদো। সেই থেকে এখনও পর্যন্ত ইউরোপিয়ান ফুটবল থেকে ফুটবলার ও কোচদের দলে আনতে ৬০ কোটি ইউরোর বেশি খরচ করে ফেলেছে সৌদি কর্তৃপক্ষ।

গত ইউরোপিয়ান মৌসুম শেষে সৌদি আরবের বিভিন্ন ক্লাবে পা রেখেছেন করিম বেনজেমা, রিয়াদ মাহরেজ, এনগোলো কঁতে, জর্ডান হেন্ডারসন, রবের্তো ফিরমিনো, এদুয়াঁ মঁদি, কালিদু কুলিবালি, অ্যালেক্স তেলিস, ম্যালকম, রুবেন নেভেসের মতো তারকাসহ আরও বেশ কিছু ফুটবলার। সেই পথ ধরে এবার মাত্র ৩১ বছর বয়সেই সৌদিতে পৌঁছে গেলেন নেইমারের মতো মহাতারকাও। কিছুদিন আগেও এমন তারকার সমাবেশ এখানে ছিল অকল্পনীয়, এখন তা বাস্তব।

এত এত তারকার সঙ্গে লড়াইয়ের তাড়নাও নেইমারকে সৌদি আরবে আসতে উদ্বুদ্ধ করেছে বলে জানালেন বার্সেলোনার সাবেক এই তারকা। নেইমার বলেন, এটা রোমাঞ্চকর অবশ্যই… অন্য দলগুলিতে শীর্ষ পর্যায়ের এত ফুটবলার থাকায় তা যে কাউকে ভালো খেলতে আরও অনুপ্রাণিত ও উজ্জীবিত করে। তার ওপর যদি রোনালদো, বেনজেমা, ফিরমিনোর মতো ফুটবলারদের বিপক্ষে খেলতে হয়, তাহলে তো উত্তেজনা আরও বেশি।

গত মাসেই ফেনারবাচে থেকে পর্তুগিজ কোচ জর্জ জেসুসকে এনে কোচের দায়িত্ব দিয়েছে আল হিলাল। এই ক্লাবে নেইমার সতীর্থ হিসেবে পাবেন রুবেন নেভেস, কালিদু কুলিবালি, সের্গেই মিলিনকোভিচ-সাভিচ ও স্বদেশি ম্যালকমকে।সতীর্থ হিসেবে তাদেরকে পাওয়া নেইমারকে সহায়তা করেছে এই সিদ্ধান্ত নিতে। এখন এই ক্লাবকে তিনি এগিয়ে নিতে চান স্বপ্ন পূরণের পথে।

নেইমার বলেন। দলে মানসম্পন্ন ফুটবলার থাকা খুব জরুরি। ক্যারিয়ার নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও অবশ্যই তা সবসময় সহায়তা করে। আমার ক্ষেত্রেও সত্যি। নতুন ইতিহাস গড়তে আমি খুবই রোমাঞ্চ নিয়ে অপেক্ষায়…সতীর্থদের নিয়ে এই ক্লাবের সব চাওয়া পূরণ করতে, আরও অনেক ট্রফি জিততে এবং ক্লাবের সব লক্ষ্য পূরণ করার পিছু ছুটতে মুখিয়ে আছি।

সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, প্রায় ৯ কোটি ইউরোতে পিএসজি থেকে আল হিলালে এসেছেন নেইমার। এখানে তার পারিশ্রমিক হবে বছরে ১৫ কোটি ইউরোর মতো। আগের ক্লাবের চেয়ে যা ৬ গুণ বেশি। এছাড়াও আবাসান, ব্যক্তিগত বিমান, প্রতিটি ম্যাচ জয়ের বোনাস, সামাজিক মাধ্যমে সৌদি আরবের ফুটবলকে তুলে ধরার বোনাস এবং আরও অনেক বাড়তি আয়ের হাতছানি চুক্তিতে আছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here