ফরিদপুরের সালথায় আছিয়া আক্তার (১৫) নামের নবম শেণির এক স্কুলছাত্রীর বাল্য বিয়ে বন্ধ করেছে পুলিশ। আছিয়া আক্তার সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের দরগা গট্টি গ্রামের আতিক মাতুব্বরের মেয়ে ও জয়ঝাপ উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শেণির ছাত্রী। স্কুলছাত্রী আছিয়া বলেন, আমার লেখাপড়া করার খুব ইচ্ছা। আমি এখন বিয়ে করতে চাই না। কিন্তু আমার পরিবার আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে ঠিক করে। বিষয়টি আমি নিজে ওসি স্যারকে ফোনে জানালে তিনি আমার বিয়ে ঠেকায়। ওসি স্যার আমার লেখাপড়ার দায়িত্বও নিয়েছেন। ওসি স্যারের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
আছিয়ার বাবা আতিক মাতুব্বর বলেন, আমার মেয়ে আছিয়া নবম শেণিতে লেখাপড়া করে। দুই তিন আগে তাকে দেখতে আসে পাত্রপক্ষ। তাদের পছন্দ হওয়ার পর তারা আমার মেয়েকে নাকফুল পড়িয়ে যান। তবে বিয়ের দিন তারিখ এখনও ঠিক হয়নি। অভিযোগ পেয়ে আজ রবিবার (২০ নভেম্বর) সকালে সালথা থানার ওসি আমাদেরকে থানায় ডেকে নিয়ে বিয়ে বন্ধ করতে বলেন। পরে বিয়ে না দেওয়ার মুচলেকা দিয়ে আমরা চলে আসি। দুপুরে ওসি আমাদের বাড়িতে এসে আমার মেয়ের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিবেন বলে জানান। এতে আমরা খুশি।
জয়ঝাপ উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান মো. মিরাজ আলী বলেন, সালথা থানার ওসি মেয়েটাকে নিয়ে আমার স্কুলে উপস্থিত হন। তিনি আমাদের জানান মেয়েটার বাল্য বিবাহ বন্ধ করা হয়েছে। পরে ওসি মেয়েটার লেখাপড়ার খরচ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। আমি তাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই, একটা মেয়ের উচ্চশিক্ষার পথ সুগম করে দেওয়ার জন্য।
সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শেখ সাদিক বলেন, আছিয়া রবিবার সকালে আমাকে ফোন দিয়ে বলে আমি লেখাপড়া করতে চাই। কিন্তু পিতামাতা ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর করে আমাকে বিয়ে দিতে চাইছে। আগামীকাল সোমবার ফরিদপুর কোর্টে নিয়ে তাকে কাবিন করবে এবং বিয়ে দিবে। এই সংবাদপ্রাপ্ত একজন এসআইকে ওই বাড়িতে পাঠাই। তিনি সেখানে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আছিয়াসহ তার পরিবারকে থানায় নিয়ে আসে। পরে তাদেরকে বাল্য বিবাহের কুফল সম্পর্কে ধারনা দেই এবং আছিয়া যে লেখাপড়া করে মানুষ হতে চায়, তাকে সে সুযোগ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করি।
তিনি আরও বলেন, এখন থেকে আছিয়ার সমস্ত লেখাপড়ার খরচের দায়িত্ব আমি গ্রহণ করবো। আমি যখন চলে যাবো তখন যে অফিসার আসবে, তাকে মেসেজ দিয়ে যাবো এবং আমি নিজেও সেসময় ওর খোজখবর রাখবো।