লক্ষ্মীপুর থেকে প্রসব বেদনা নিয়ে ইতি আক্তার নামে এক নারী ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২১২ নাম্বার ওয়ার্ডের ভর্তি।পরে জরুরী তাকে সিজার করা হয়। এ সময় তার একটি নবজাতক মারা যায় এবং আরেকটিকে এনআইসিইউতে নিতে বলে চিকিৎসক। সেখানে ঐ নবজাতককে নিয়ে যাওয়ার পর ওয়ার্ড বয় মনির হোসেন আকন্দের পছন্দমত আহমেদ হসপিটালে নিয়ে যেতে দেরি করায় অক্সিজেন খুলে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শনিবার(২৮ অক্টোবর )ভোর রাতে পছন্দের এনআইসিইউতে না নেওয়ায় অক্সিজেন খুলে দেন মনির হোসেন আকন্দ নামে ২১১ নম্বর ওয়ার্ডের ওয়ার্ড বয়।
ভুক্তভোগী ওই নবজাতকের মামা সজীব বলেন, আমার বোনকে শনিবার ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক জানায় আপনার বোনের পেটে দুটি নবজাতকের কাছে এর মধ্যে একটি মারা গেছে আরেকজনকে দ্রুত সিজার করে বের করতে হবে। চিকিৎসক আরও বলেছিলন এই বাচ্চা জন্ম নেয়ার পর তার জরুরী ভিত্তিতে এনআইসিইউ লাগতে পারে। পরে বাচ্চা হওয়ার পরে ভোর রাতের দিকে আমি নবজাতককে এনআইসিইউতে নিয়ে যাই।সেখানে ওয়ার্ড বয় মনির হোসেন আকন্দ জানায় এখানে সিট ফাঁকা নেই এবং আপনি পাশেই চাংখারপুল আহমেদ স্পেশালাইজড হাসপাতালে নিয়ে যান। আমি বললাম আমি তো চিনি না এত রাতে আমি কোথায় নিয়ে যাব। সে জানায় আপনি এখানে নিয়ে যান অল্প টাকায় ভালো চিকিৎসা পাবেন এবং সকালে আপনাকে ঢাকা মেডিকেলে একটি এনআইসিইউ ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। আমি বললাম বাচ্চাটাকে একটু রাখেন আমি একটু খোঁজখবর নিয়ে আসি। পরে সে বলে এখানে বাচ্চা রাখা যাবে না তাকে দ্রুত এখান থেকে নিয়ে যান। আমি কিছুক্ষণ রাখতে বলায় এসে সত্য নবজাতকের অক্সিজেন খুলে দেয়। পরে আমি বাধ্য হয়েই আহমেদ স্পেশালাইজড হসপিটালে নিয়ে যাই। সেখানে আমাকে ৪ হাজার টাকা খরচ হবে বলে জানায়। পরে আমি নিরুপায় হয়েই তার দেওয়া একজন লোকের মাধ্যমে আহমেদ স্পেশালাইজড হাসপাতালে যাই। তারা এখন আমার রোগী সঠিক চিকিৎসা না করে মোটা অংকের বিল ধরিয়ে দিয়েছে।
তিনি আরো বলেন, সে আমাদের সাথে প্রতারণা করেছে।একজন সরকারি স্টাফ হয়ে সে বেসরকারি হাসপাতালের দালালি করে। সে টাকার জন্য সদ্য নবজাতককে অক্সিজেন খুলে দিতে পারে এটা খুবই দুঃখজনক।আমরা এই বিষয়টি পরিচালকের অবগত করব বলে জানান তিনি।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মনির হোসেন আকন্দ চতুর্থ শ্রেণীর সরকারি কর্মচারীদের একজন নেতা। সে বিভিন্ন হাসপাতালে এনআইসিইউতে রোগী পাঠিয়ে মাসে মোটা অংকের কমিশন হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সে প্রথমে কম টাকায় ভালো মানের চিকিৎসা পাবে বলে আশেপাশের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে রোগী পাঠায় এবং বলে আপনার এখানে সিট ফাঁকা হলে আপনাকে জানানো হবে। কিন্তু রোগীর স্বজনরা এখানে ঘুরতে থাকলেও তারা একটি এনআইসিইউয়ের ব্যবস্থা করতে পারেন না। যতদিন হাসপাতালে থাকবে তত তাদের কমিশন বাড়তে থাকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মচারী বলেন, মনির হোসেন আকন্দ বিভিন্ন বেসরকারি আইসিইউতে রোগী পাঠিয়ে মাসে কয়েক লক্ষ টাকা ইনকাম করেন। সে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীদের নেতা হওয়ায় অনেকেই তার বিরুদ্ধে কথা বলতে সাহস পায় না। নিরবে সে বেসরকারি হাসপাতালে রোগী পাঠিয়ে লাখ লাখ টাকা ইনকাম করছে।
এসএএ/