অস্ত্র প্রতিযোগিতা মানুষের ধ্বংস ডেকে আনে, যুদ্ধ বন্ধ করেন : প্রধানমন্ত্রী

0
55

গাজায় হামলা করা ইসরায়েলের সহায়তাকারী ও মদতদাতা পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনারা আর যা হোক যুদ্ধ বন্ধ করেন। এই যুদ্ধ মানুষের মঙ্গল আনে না। এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করেন। অস্ত্র প্রতিযোগিতা মানুষের ধ্বংস ডেকে আনে।

আজ সোমবার (৩০ অক্টোবর) সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা অনেক মানবাধিকারের কথা শুনি, কিন্তু প্যালেস্টাইনের জনগণ অমানবিক কষ্টের মধ্য দিয়ে জীবন যাপন করছে। সেখানে ইসরায়েলের আক্রমণ, বিশেষ করে নারী ও শিশুদের ওপর হামলা হচ্ছে। সবচেয়ে জঘন্য কাজ হচ্ছে আল আহালি-আল আরাফ ব্যাপ্টিস হাসপাতাল। ওখানকার নারী-শিশুদের মায়েরা মনে করেছিল, এই হাসপাতালে তাদের সন্তানরা নিরাপদ থাকবে। কিন্তু সেখানে তারা এয়ারঅ্যাটাক করে, বোম্বিং করে এবং নারী ও শিশুকে হত্যা করে। এটা একটা জঘন্যতম কাজ ঘটিয়েছে। এর নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নেই। আমরা এই হাসপাতালে হামলার নিন্দা জানাচ্ছি। এসব বিষয় হলে আমরা প্রতিবাদ করি, এটা আমাদের নীতি। তারা হাসপাতালের মত জায়গায় কীভাবে হামলা করতে পারল? আর এভাবে মানুষদের হত্যা করতে পারল, বিশেষ করে শিশু ও নারীদের।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর আগেও তারা এভাবে হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। অন্তঃসত্ত্বা নারী ও শিশুদের হত্যা করেছে। অর্ধশত নারীদের হত্যা করেছে। শিশুরা বড় হলে নাকি যোদ্ধা হয়ে যায়, তাই তাদেরকে শেষ করে দেওয়া; এই ধরনের ঘটনা আমি কোনভাবেই মেনে নিতে পারি না। আমার মনে আছে ১৯৯৪-৯৫ সালের দিকে হেবরোনে মসজিদে ৬০ জন মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছিল। সে সময় আমরা বিরোধীদলে ছিলাম। পার্লামেন্টে আমরা আলোচনা করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু তখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিল। আমাদের তখন সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমরা পার্লামেন্ট থেকে বের হয়ে গিয়েছিলাম। তার থেকে বড় বিষয় হচ্ছে এসব বিষয় দেখলে প্রতিবাদ করা। আর আমি তো একজন মা। মানুষ হিসাবে এটা তো আমাদের কর্তব্য। আজকে এই হত্যাকাণ্ড ও যুদ্ধ আমরা চাই না। আমরা ইতোমধ্যে বাংলাদেশ থেকে ওষুধ, শুকনা খাবার এবং শিশু ও নারীদের জন্য কিছু পণ্যসামগ্রী পাঠিয়েছি। কিন্তু সেটা ওখানে পৌঁছানোর সুযোগ নেই। আমরা ইজিপ্টে পৌঁছেছি। সেখান থেকে তারা পৌঁছে দেবে। 

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই অন্তত তাদের সেবা খাতটা খুলে দেওয়া হোক। যাতে করে ওখানকার মানুষগুলো বাঁচতে পারে। সেই সেবা খাতটা তারা বন্ধ করে কষ্ট দিচ্ছে। আমি বাংলাদেশে আমাদের ওআইসি দেশগুলোর সমস্ত অ্যাম্বাসেডর, প্রতিনিধি তাদের সাথে বৈঠক করেছি। তাদের সাথে আলোচনা করেছি এবং কীভাবে ফিলিস্তিনি জনগণের পাশে দাঁড়ানো যায় এবং সে বিষয় নিয়ে আমরা আলাপ আলোচনা করেছি। আমি কয়েকদিন আগে বেলজিয়াম গিয়েছিলাম, ইউরোপীয় ইউনিয়নের দাওয়াতে। সেখানে আমি ভাষণেও আমি এই কথাটা তুলে ধরেছি। সেখানে সমস্ত ইউরোপ ইউনিয়ন ও অন্যান্য দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধান ও অন্যান্য প্রতিনিধি যারা ছিল; তাদের কাছে আমার আহ্বান ছিল, আপনারা আর যা হোক যুদ্ধ বন্ধ করেন। এই যুদ্ধ মানুষের মঙ্গল আনে না। এই অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করেন। অস্ত্র প্রতিযোগিতা মানুষের ধ্বংস ডেকে আনে। ফিলিস্তিনিতে আজ নারী ও শিশুরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই হত্যাকাণ্ড বন্ধের জন্য আমি আহ্বান জানিয়েছি। তাদের প্রতি আমার আহ্বান, এই অস্ত্রে যে পরিমাণ অর্থ ক্ষতি হচ্ছে, সেই অর্থ দিয়ে শিশুদের শিক্ষা ও তাদের চিকিৎসায় খরচ করেন। তাহলে আর কোন দুঃখ থাকবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here