গাজীপুরের কাপাসিয়া থানায় নাশকতা মামলায় প্রায় তিন বছর আগে মারা যাওয়া অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষা কর্মকর্তাকে আসামি করার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশের করা মামলায় মৃত ব্যক্তিকে আসামি করায় জেলাজুড়ে তৈরি হয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
গত রোববার (২৯ অক্টোবর) গাজীপুরের কাপাসিয়া থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) সালাউদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় ২২ জন আসামির মধ্যে ১৮ নম্বর আসামি করা হয়েছে মো. আমিন উদ্দিন মোল্লাকে (৬৫)। তিনি উপজেলার ঘাগুটিয়া ইউনিয়নের খিরাটি গ্রামের মৃত আশরাফ আলী মোল্লার ছেলে। মো. আমিন উদ্দিন মোল্লা নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছিলেন। অবসরের পর তিনি জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
আমিন উদ্দিন মোল্লার জামাতা মো. মোজাম্মেল হক বলেন, ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি আমার শ্বশুর মারা যান। মারা যাওয়ার ২ বছর ৯ মাস পর শ্বশুরকে মামলার আসামি করা হয়েছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
মামলার এজাহারে বলা হয়, কাপাসিয়া সদরের তরগাঁও মেডিকেল মোড় এলাকায় বিএনপি ও জামায়াতের উশৃঙ্খল নেতাকর্মীরা অস্থিতিশীল ও অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করার জন্য সংঘবদ্ধ হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পালিয়ে যান। পরে ঘটনাস্থল থেকে তাদের ফেলে যাওয়া অবিস্ফোরিত চারটি ও বিস্ফোরিত একটি ককটেল উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় চারটি পেট্রোল বোমা উদ্ধার করে পুলিশ। মামলার এজাহারে আমিন উদ্দিন মোল্লার বয়স ৪৫ বছর উল্লেখ করা হয়েছে।
মামলার বাদী কাপাসিয়া থানার এসআই সালাউদ্দিন বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। আমি এই থানায় নতুন। এ ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু বকর মিয়া বলেন, ১৮ নং আসামি সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে।
গাজীপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ্ রিয়াজুল হান্নান রিয়াজ বলেন, অন্যায়ভাবে আমাদের নেতাকর্মীদের নামে মামলা হচ্ছে, রাতে বাড়িতে বাড়িতে অভিযান চালানো হচ্ছে। নেতাকর্মীদের অনেককেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আবার অনেকেই বাড়িতে যেতে পারছেন না মামলায় গ্রেপ্তারের শঙ্কায়। এমন অবস্থায় কঠিন সময়ের মধ্যেও দলীয় কর্মসূচি পালন করছি আমরা। যতই বাধা আসুক আমরা পেছনে ফিরছি না, হামলা ও মামলা দিয়ে নেতাকর্মীদের মনোবল ভাঙা যাবে না।
মৃত ব্যক্তিকে মামলার আসামি করার বিষয়ে গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হবে।