দ্রুত তিস্তা চুক্তি সম্পন্ন করতে চায় বাংলাদেশ

0
53

বাংলাদেশ এবং ভারতের পররাষ্ট্র সচিব তিস্তা চুক্তি এবং অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন চুক্তির দ্রুত সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন।

শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে ভারতের নয়াদিল্লিতে হায়দ্রাবাদ হাউসে এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলাপ করেন তারা।

বাংলাদেশ-ভারত ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ বাংলাদেশের রপ্তানিযোগ্য পণ্যের ওপর থেকে বাণিজ্য বাধা অপসারণ এবং দুই দেশের মধ্যে প্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহের ওপর জোর দেওয়া হয়।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এবং ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা বৈঠকে তাদের নিজ নিজ পক্ষের নেতৃত্ব দেন। বৈঠকে সীমান্ত নিরাপত্তা থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং পানি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সহযোগিতার ব্যাপক দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

বৈঠকের পর ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এফওসি সম্পর্কে নয়াদিল্লি ও ঢাকায় পৃথক বিবৃতি জারি করেছে। এফওসি হচ্ছে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সকল বিষয় পর্যালোচনা করার জন্য পররাষ্ট্র সচিবদের মধ্যে একটি প্রাতিষ্ঠানিক সংলাপ প্রক্রিয়া।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব তার প্রতিপক্ষকে জনগণের মধ্যে যোগাযোগ আরও গভীর ও প্রসারিত করার জন্য অনুরোধ করেছেন এবং রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে ভারতের সহায়তা চেয়েছেন। উভয় পক্ষ দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের জনগণের বৃহত্তর সমৃদ্ধির জন্য সহযোগিতা আরও গভীর করার ওপর জোর দিয়েছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব ভারতের জি-২০ প্রেসিডেন্সির অধীনে একমাত্র দক্ষিণ এশিয়ার নেতা হিসেবে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে জি-২০ লিডারস সামিটে যোগদানের জন্য আমন্ত্রণ জানানোর জন্য ভারত সরকারকে ধন্যবাদ জানান। উভয় পররাষ্ট্র সচিব বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এবং ২০২৩ সালে অর্জিত অগ্রগতির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

দুই প্রধানমন্ত্রীর দ্বারা সংযোগ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সম্প্রতি কয়েকটি প্রকল্পের উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করে তারা বলেন, এই ধরনের সহযোগিতা শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বাস্তব ফলাফলকে প্রতিফলিত করে।

দুই পররাষ্ট্র সচিব উন্নয়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য, আঞ্চলিক সংযোগ, আঞ্চলিক পাওয়ার গ্রিড সংযোগ, নিরাপত্তা ও পানি সংক্রান্ত সমস্যা, কনস্যুলার এবং সাংস্কৃতিক বিষয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

তারা বাংলাদেশের উত্তরণের পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করার বিষয়েও আলোচনা করেন। উভয় পক্ষ পুনর্ব্যক্ত করেছে যে, দুটি দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী একটি শান্তিপূর্ণ সীমান্ত বজায় রাখতে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুসারে, উভয় পক্ষ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সববিষয় পর্যালোচনা করেছে। তারা সীমান্ত ও নিরাপত্তা, ব্যবসা, বাণিজ্য ও সংযোগ, পানি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক এবং বাংলাদেশে উন্নয়ন সহযোগিতা সহ বিস্তৃত বিষয়ে আলোচনা করেছেন। দ্বিপাক্ষিক ইস্যু ছাড়াও উভয় পক্ষ উপআঞ্চলিক, আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক বিষয়েও মতবিনিময় করেছে।

বৈঠকে ঐকমত্য হয়েছে, পরবর্তী এফওসি পারস্পরিক সুবিধাজনক তারিখে বাংলাদেশ আয়োজন করবে। এ বছর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এটি ছিল দ্বিতীয় ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি)। প্রথমটি গত ফেব্রুয়ারিতে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here