সাময়িক যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হতে না হতেই গতকাল শুক্রবার থেকে গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ১৮৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা। কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা ও ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে।
গাজার স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হওয়ার পরপরই গতকাল সকাল থেকে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ১৮৪ ফিলিস্তিনি নিহত হওয়ার পাশাপাশি আহত হয়েছে অন্তত ৫৮৯জন। এ ছাড়া ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে ২০টিরও বেশি।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নিহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু বলে দাবি করেছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তবে মন্ত্রণালয়ের এ দাবির সত্যতা তাৎক্ষণিকভাবে যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।
প্রত্যক্ষদর্শীরা গতকাল সন্ধ্যায় রয়টার্সের সাংবাদিকদের বলেন, গতকাল সকাল থেকে নতুন করে হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। তারা সবচেয়ে বেশি হামলা চালিয়েছে খান ইউনিস ও রাফাহ শহরের দক্ষিণাঞ্চলে। গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে পালিয়ে এসে লাখ লাখ বাসিন্দা এসব অঞ্চলে আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু এখানেও ইসরায়েলি বোমা হামলা থেকে মুক্তি মিলছে না নিরীহ ফিলিস্তিনিদের।
এদিকে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই বলছে, হামাসও ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা চালিয়েছে। গতকাল ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে হামাসের হামলার পর সাইরেন বেজে উঠে। গাজা সীমান্তের ইয়াদ মোরদেচাই ও নেটিভ হাতারা এলাকায় এই সাইরেন বাজানো হয়।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরা বলছে, টানা ৭ দিনের যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয় শুক্রবার স্থানীয় সময় সকাল ৭টায়। এরপর গাজায় রকেট হামলা ও বন্দুকযুদ্ধ শুরু হয়। এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানায়, হামাস ইসরায়েলি ভূখণ্ডের দিকে রকেট ছোড়ায় গাজায় ফের হামলা শুরু হয়েছে।
গাজায় প্রথম দফায় চারদিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বাস্তবায়ন শুরু হয় গত ২৪ নভেম্বর। পরে চুক্তির শেষ দিনে তা আরও দুদিনের জন্য বৃদ্ধি করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার আরও এক দফায় একদিনের জন্য এই চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়। শুক্রবার যুদ্ধবিরতির মেয়াদ শেষ হয়েছে।
যুদ্ধবিরতির সময় সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত ২১০ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে ইসরায়েল। অন্যদিকে হামাস মুক্তি দিয়েছে ১০০ জন ইসরায়েলি ও অন্যান্য বিদেশি নাগরিককে।
গত ৭ অক্টোবরের পর হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ ইসরায়েলি নিহত হয়েছে এবং হামাস অন্তত ২৪০জনকে জিম্মি করে নিয়ে গেছে বলে দাবি করেছে ইসরায়েল। অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবরের পর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ১৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।