আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেছেন, মিথ্যা, অপপ্রচার, গুজবের রাজনীতি বিএনপির শক্তি। তারা গুজব ছড়িয়ে, মিথ্যাচার করে, অপপ্রচার করে রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়। এরা দুর্নীতির জন্য মরিয়া হয়ে আছে। এরা দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানানোর শেষ প্রান্তে দাঁড় করিয়েছিল। এরা বিরোধী দলে থেকে গত নির্বাচনে প্রায় ৭০০ মনোনয়ন দিয়ে মনোনয়ন বাণিজ্য করেছে। এখন আবার তারা ক্ষমতায় এসে দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হতে চায়। তারা ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় যেমন দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তারা দেশকে আবার সেই অবস্থায় ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চায়। বিএনপি জামায়াতকে মিথ্যাচার ও দুর্নীতির মাধ্যমে আর রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে দেওয়া হবে না।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে ধানমন্ডি থানার ১৫ নং ওয়ার্ড, হাজারীবাগ থানার ১৪ ও ২২ নং ওয়ার্ড, কলাবাগান থানার ১৬ ও ১৭ নং ওয়ার্ড এবং নিউমার্কেট থানার ১৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন তিনি এসব কথা বলেন।প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি বলেন, একাত্তরের পরাজিত শক্তি রাজাকার, আল বদররা দেশকে মিনি পাকিস্তান বানানোর জন্য সব সময় ষড়যন্ত্র করেছে। সেই ষড়যন্ত্রের হাত থেকে বাংলাদেশের মানুষকে মুক্তিদাত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা দেশে এসে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দীর্ঘ লড়াই সংগ্রাম করে তিনি বাংলাদেশকে বিশ্ব দরবারে সম্মানিত দেশ হিসেবে ও সম্মানিত জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। বাংলাদেশ এখন বিশ্ব দরবারে রোল মডেল হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ঠিক তখনই এই অশুভশক্তিরা নতুন করে ষড়যন্ত্র করে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির পথকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। এরা বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে গড়তে চায়।
বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এই বিএনপি-জামায়াত মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি ও রাজাকাররা বাংলাদেশের মানুষের বিপক্ষে ও বাংলাদেশের গণতন্ত্রের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এরা স্বৈরাতন্ত্রের পক্ষে এবং পাকিস্তানি আদর্শ মেনে চলে। বাংলাদেশের রাজনীতিকে এরা ধ্বংস করেছিল। বাংলাদেশকে পাল্টে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছিল। জাতির পিতার হত্যাকারীদের রক্ষা করার জন্য জিয়াউর রহমান আইন জারি করেছিল। এরা ভিতরে জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ বিএনপি-জামায়াত সৃষ্টি হয়েছে সাম্প্রদায়িক শক্তির উপর ভর করে ক্ষমতায় যেতে চায়।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের এই প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বলেন, এই অশুভ শক্তি ক্ষমতায় গিয়ে ২০০১ সালে বাংলাদেশে লুটপাট শুরু করে। এরা সংখ্যালঘুদের উপর তখন থেকেই হামলা চালায়। এরা মুসলমানদেরও ছাড়ে নাই। এই সন্ত্রাসী দলের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এখন বলেন আওয়ামী লীগ নাকি সাম্প্রদায়িক হামলা চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগ সকল দল-মত নির্বিশেষে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে। এটা আমাদের গণতন্ত্রের মূলনীতি।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান চেয়েছিলেন বাংলাদেশের মানুষকে অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়ে দেশকে বিশ্বে মর্যাদাশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে। কিন্তু ঘাতকের দল আমাদের মহান নেতাকে তার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার আগেই নির্মমভাবে হত্যা করে। ঘাতকেরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা তা পারেনি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়ন সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা শুধু দেশের উন্নয়ন করেননি, গণতন্ত্রের উন্নয়ন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রও কিছুদিন আগে তাদের সূচকে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সূচক উন্নয়ন করেছে তা স্বীকার করেছে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি মো. কামরুল হাসান রিপনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক তারিক সাঈদের সঞ্চালনায় সম্মেলন উদ্বোধন করেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১০ আসনের সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, সন্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু।