দক্ষিণ আমেরিকার দেশ কলম্বিয়ায় একটি কয়লা খনিতে বিস্ফোরণে কমপক্ষে ১১ জন নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় মাটির নিচে আটকা পড়েছেন আরও ১০ জন। ভুক্তভোগীদের উদ্ধারে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
কলম্বিয়ার কুন্দিনামার্কা প্রদেশের গভর্নরের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানী বোগোটা থেকে ৭৪কিমি (৪৬ মাইল) উত্তরে অবস্থিত সুতাতাউসার পৌরসভায় একটি কয়লা খনিতে বিস্ফোরণের এই ঘটনাটি ঘটেছে বলে গভর্নর নিকোলাস গার্সিয়া বুধবার ব্লু রেডিওকে বলেছেন। মূলত খনিতে কর্মরত একজন শ্রমিকের হাতিয়ার থেকে স্ফুলিঙ্গ সৃষ্টি করার পরে গ্যাসের কারণে ওই বিস্ফোরণ ঘটে।
আল জাজিরা বলছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতে খনিতে বিস্ফোরণের ওই ঘটনাটি ঘটে। নিকোলাস গার্সিয়া সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘মানুষ ৭০০ থেকে ৯০০ মিটার (২৩০০ থেকে ৩০০০ ফুট) মাটির নিচে আটকা পড়েছে। ইতোমধ্যেই দু’জনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং সাতজন কোনও সহায়তায় ছাড়াই বেরিয়ে আসতে পেরেছেন।
গভর্নর জানান, আটকে পড়া খনি শ্রমিকদের উদ্ধারের জন্য শতাধিক উদ্ধারকর্মী কাজ করছেন। তিনি বলেছেন, ‘শ্রমিকদের উদ্ধারে প্রতিটি মিনিট পার হওয়া মানে অক্সিজেন কমে যাচ্ছে।’
এদিকে টুইটারে পোস্ট করা এক বার্তায় কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো নিশ্চিত করেছেন, খনিতে বিস্ফোরণের ঘটনায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং এটিকে তিনি ‘ট্র্যাজেডি’ হিসাবে উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘আটকে পড়া মানুষদের জীবিত উদ্ধারে আমরা কুন্দিনামার্কা সরকারের সাথে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ভুক্তভোগী এবং তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা।’
বিস্ফোরণের ঘটনায় বেঁচে যাওয়া ৩৩ বছর বয়সী জোসেলিটো রদ্রিগেজ টেলিফোনে বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, কাজ করার সময় তিনি হঠাৎ ‘কম্পন’ অনুভব করেন। তার ভাষায়, ‘তারপর আমি শ্বাসরোধের মতো অনুভব করি এবং কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না।’
তিনি আরও বলেন, ‘সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ আমরা নিরাপদে বের হয়েছি, কিন্তু অন্যরা মারা গেছেন।’
এএফপি বলছে, কলম্বিয়ায় অসংখ্য উন্মুক্ত এবং ভূগর্ভস্থ সোনা ও কয়লা খনি রয়েছে। আর তাই প্রায়শই সেখানে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। এসব খনির বেশিরভাগই বেআইনিভাবে পরিচালিত হয় বা পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করে না।
২০১০ সালের জুন মাসে কলম্বিয়ার উত্তর-পশ্চিমে একটি খনিতে বিস্ফোরণের ঘটনায় ৭৩ জন নিহত হয়েছিলেন। এছাড়া ২০২১ সালে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটিতে খনিতে নানা দুর্ঘটনায় ১৪৮ জন প্রাণ হারান।
এসএএ/