ভূমি সংক্রান্ত সেবার ডিজিটালাইজেশনের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, মানুষকে আর কষ্ট পেতে হবে না। আমরা চাই বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের অনিয়ম দূর হয়ে যাক। গতকাল বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘জাতীয় ভূমি সম্মেলন-২০২৩’ এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের ৭টি উদ্যোগের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ভূমি সংক্রান্ত সেবা নিতে গিয়ে অনেক সময় অনেক মানুষকে হয়রানির সম্মুখিন হতে হয়েছে। ইনশাল্লাহ, আমরা যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলছি, আর এই কষ্টটা মানুষকে পেতে হবে না। তিনি বলেন, দেশে থাকেন, প্রবাসে থাকেন, যেখানেই থাকেন, আপনার সম্পদ আপনারই থাকবে। সেভাবেই আপনার অধিকার যাতে সুরক্ষিত হয়, সুনিশ্চিত হয় সেই ব্যবস্থাটাই আমরা করেছি। আমরা চাই বাংলাদেশ থেকে সব ধরনের অনিয়ম দূর হোক। শেখ হাসিনা বলেন, মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষা; সব ধরনের সুযোগ সৃষ্টির সঙ্গে সঙ্গে যে সমস্যাগুলো বিভিন্ন পারিবারিকভাবে বা নানাভাবে মানুষকে কষ্ট দিত সেগুলো দূর করারও পদক্ষেপ নিয়েছি আমরা। জনগণের কল্যাণ সাধনই আমাদের লক্ষ্য।
সরকারি কর্মকর্তাদের নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের সেবক। জনগণের অধিকার আদায়ের সংগ্রাম থেকেই আওয়ামী লীগের জন্ম। জন্মলগ্ন থেকে আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। সরকারে এসে আমরা জনগণের সেবা করার ব্রত নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। ভূমি বণ্টন ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত জটিলতা বিষয়ে তিনি বলেন, কথায় বলে যে জোর যার মুল্লুক তার। অনেক সময় ভাই বোনকে বঞ্চিত করে আবার বোন যদি শক্তিশালী হয়ে যায়, সেও ভাইকেও বঞ্চিত করে। আবার বোনও বোনকে বঞ্চিত করে। এ রকমও ঘটনা আছে। প্রায়ই এই সমস্যাটা আসে। বণ্টন ব্যবস্থা ডিজিটালাইজড করে সুনির্দিষ্ট করার ওপর গুরুত্বারোপ করে সরকার প্রধান বলেন, বণ্টন ব্যবস্থা যদি যথাযথভাবে হয়ে যায়, যার যার অধিকার সে সমানভাবে পাবে, তারপর কেউ যদি মনে করে সেটা সে দান করে দেবে বোনকে বা ভাইকে, তবে সেটা দান করে দেবে। এক্ষেত্রে বোনরা সব থেকে বেশি বঞ্চিত হয়। এটাও বাস্তবতা। বণ্টন ব্যবস্থা ডিজিটালাইজড করে সুনির্দিষ্টভাবে করতে পারলে অনেক পারিবারিক সমস্যাও সমাধান হয়ে যাবে। সম্পদের সঙ্গে মানুষের লোভ-লালসা বাড়ছে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, অধিকাংশ সমস্যা আমরা দেখতে পাচ্ছি, মানুষের যত বেশি অর্থ-সম্পদ হচ্ছে, ততেই বেশি চাহিদা বাড়ছে এবং তত বেশি লোভ-লালসা বাড়ছে। পারিবারিক সংঘাত, খুন-খারাবি, দ্বন্দ্ব; এগুলোর সৃষ্টি হচ্ছে। গতকাল বুধবার ভূমি মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়িত ৭টি উদ্যোগের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এগুলো হলো- ১. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্মৃতি স্তম্ভ ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব গুচ্ছগ্রাম কমপ্লেক্স, ২. নবনির্মিত ৪০০টি ইউনিয়ন ভূমি অফিস, ৩. স্মার্ট ভূমি নকশা, ৪. রেজিস্ট্রেশন-মিউটেশন আন্তঃসংযোগ, ৫. স্মার্ট ভূমি রেকর্ডস, ৬. স্মার্ট ভূমিপিডিয়া এবং ৭. স্মার্ট সেবা কেন্দ্র। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন- ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী। মঞ্চে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক, ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মকবুল হোসেন, ভূমি সচিব মোস্তাফিজুর রহমান।