গ্যাসের দাম রুবলে চায় রাশিয়া, দেশগুলো মানবে কি

0
369

গত মার্চে ‘অবন্ধুসুলভ’ দেশগুলোকে রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানির জন্য শর্ত বেঁধে দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাঁর দাবি, ক্রেতাদের গ্যাসের মূল্য রুবলে পরিশোধ করতে হবে। এর জন্য তাদের গ্যাজপ্রমের ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে এবং ইউরো ও ডলারে পরিশোধিত অর্থ রুবলে রূপান্তর করতে হবে। এর ব্যতিক্রম হলেই গ্যাস সরবরাহ চুক্তি স্থগিত করবে মস্কো।

তবে মস্কোর এ দাবি মানতে রাজি নয় অনেক ক্রেতাদেশ। এমন অবস্থায় রাশিয়ার জ্বালানি কোম্পানি গ্যাজপ্রম আজ বুধবার থেকে পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়ায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। ইউক্রেনে রুশ হামলা শুরুর পর পোল্যান্ড ও বুলগেরিয়াই প্রথম দেশ, যাদের সঙ্গে গ্যাস-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে যাচ্ছে রাশিয়া। মস্কোর দাবি কতটা যৌক্তিক, ক্রেতাদেশগুলো তাদের দাবি মেনে নেবে কি না, তা নিয়ে একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউক্রেন যুদ্ধকে কেন্দ্র করে রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। তবে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানির ক্ষেত্রে খুব একটা নিষেধাজ্ঞার পথে হাঁটেনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন। রাশিয়া থেকে চলতি বছরের এ পর্যন্ত দৈনিক গ্যাস চাহিদার ৪০ শতাংশ রাশিয়া থেকে আমদানি করেছে ইউরোপ। এর জন্য দৈনিক ২০ থেকে ৮০ কোটি ইউরো পরিশোধ করা হচ্ছে।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠান রিস্তাদ এনার্জির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানির অর্থ সাধারণত ইউরো অথবা ডলারে পরিশোধ করে ক্রেতাদেশগুলো। রুবলে এ অর্থ পরিশোধ করা হলে রাশিয়া অর্থনৈতিকভাবে সুবিধা পাবে।

বেশ কয়েকটি ক্রেতাদেশ বলেছে, তারা ইউরোতেই গ্যাসের দাম পরিশোধ করবে। কারণ, চুক্তি অনুযায়ী এখানে বিনিময় মুদ্রার ধরন পরিবর্তনের সুযোগ নেই। কোনো কোনো আইন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, রাশিয়া একতরফাভাবে চুক্তির শর্ত পরিবর্তন করতে পারবে না।

সিডনির টেকনোলজি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর পাবলিক পলিসি অ্যান্ড গভর্ন্যান্সের প্রধান অর্থনীতিবিদ টিম হারকোর্ট বলেন, ‘চুক্তি দুই পক্ষের মধ্যে হয়েছে এবং সে অনুযায়ী সাধারণত মার্কিন ডলার ও ইউরোতে দাম পরিশোধ করা হয়। এখন কোনো পক্ষ যদি একতরফাভাবে বলে যে আপনাদের এ পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে, তাহলে তো চুক্তি থাকছে না।’

হাঙ্গেরি ও জার্মানিতে রাশিয়ার গ্যাসের প্রধান আমদানিকারক কোম্পানি ইউনিপারের মতো গুটিকয়েক ক্রেতা বলছে, মস্কো ঘোষিত স্কিম অনুযায়ী ভবিষ্যতে অর্থ পরিশোধ সম্ভব হবে। এতে ইইউর নিষেধাজ্ঞার লঙ্ঘন হবে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here