রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতির পর ডলার সংকটে পড়ে দেশ। ডলার সাশ্রয়ের নানা উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তবুও রিজার্ভের ওপর চাপ কমছে না। বরং আমদানি বিল পরিশোধে প্রতিনিয়তই রিজার্ভ থেকে বাজারে ডলার সরবরাহ করা হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি হওয়ায় দেশের রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। বর্তমানে দেশের রিজার্ভের পরিমাণ ৩০.৯৩ বিলিয়ন ডলার বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এদিকে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির দর আরও এক টাকা ৫০ পয়সা বাড়িয়েছে ব্যাংকটি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি সপ্তাহের শেষে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) সদস্য হিসেবে বাংলাদেশকে ১.১২ বিলিয়ন ডলার আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে হবে। ব্যয় পরিশোধের পর দেশের রিজার্ভ কমে ২৯.৮১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়াবে।সদস্য দেশগুলোর কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতি দুই মাস পর পর আকুর আমদানি ব্যয় পরিশোধ করে থাকে। আকুর সদস্য দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, ইরান, মালদ্বীপ, মিয়ানমার, নেপাল ও পাকিস্তান। এরই মধ্যে এই জোট থেকে বেরিয়ে গেছে শ্রীলঙ্কা।
আইএমএফের হিসাব অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক গণনা পদ্ধতিতে আরও ৫.৫ বিলিয়ন ডলার বাদ দিয়ে রিজার্ভের হিসাব করতে হবে। এতে বাংলাদেশের ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়াবে ২৪.৩১ বিলিয়ন ডলার।
এদিকে ডলারের দর আরও বাড়েছে। গতকাল মঙ্গলবার থেকে ১০৪ টাকা ৫০ পয়সা দরে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত সোমবার পর্যন্ত প্রতি ডলারের জন্য ১০৩ টাকা নেওয়া হতো।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের মঙ্গলবার পর্যন্ত অর্থাৎ ১০ মাস দুই দিনে (২০২২ সালের ১ জুলাই থেকে চলতি বছরের ২ মে) রিজার্ভ থেকে মোট এক হাজার ১৮৩ কোটি ২৮ লাখ (১১.৮৩ বিলিয়ন) ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে সব ব্যাংক এই ডলার পাচ্ছে না। সরকারের প্রয়োজনীয় আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য শুধু রাষ্ট্রায়ত্ত কয়েকটি ব্যাংকের কাছে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। অন্য ব্যাংকগুলোকে আন্ত ব্যাংক মুদ্রাবাজার থেকে ডলার কিনে আমদানি কার্যক্রম চালাতে হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার আন্ত ব্যাংক মুদ্রাবাজারে ডলারের সর্বোচ্চ দর ছিল ১০৭ টাকা, সর্বনিম্ন ১০৬ টাকা ৯৫ পয়সা।