দেশের ইতিহাসে চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ লবণ উৎপাদনের রেকর্ড হয়েছে। তবু ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে চলতি মৌসুমে প্রায় তিন লাখ মেট্রিক টন লবণ কম উৎপাদন হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। চাষি পর্যায়ে যার বাজার মূল্য প্রায় ৩৫০ কোটি টাকা।
লবণ উৎপাদন, মজুদ, বাজারের চাহিদা মনিটরিং ও বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক)। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সাধারণত নভেম্বর মাসের শুরু থেকে মে মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত লবণ চাষের উপযুক্ত সময়। চলতি বছরে ১২ মে পর্যন্ত লবণ উৎপাদন হয়েছে ২২ লাখ ৩২ হাজার ৮৯০ মেট্রিক টন, যা প্রতিদিন গড়ে ২৫ হাজার মেট্রিক টন। আগামী ২৫ তারিখ পর্যন্ত লবণ চাষ করার লক্ষ্য নির্ধারিত ছিল। সেই লক্ষ্য অনুযায়ী লবণ ১৩ দিন কম চাষ হলো। এই ১৩ দিনে তিন লাখ মেট্রিক টনের বেশি লবণ উৎপাদন হতো যদি ঘূর্ণিঝড় মোখা আঘাত না করত। তবে এখন পর্যন্ত যা উৎপাদন হয়েছে তা গত ৬২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। ফলে চলতি বছর লবণ আমদানি করা লাগবে না বলে মনে করছেন তাঁরা।
বিসিকের ১২টি কেন্দ্র চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে অবস্থিত। এই দুই জেলার কুতুবদিয়া, মহেশখালী, কক্সবাজার সদর, রামু, চকরিয়া, পেকুয়া, টেকনাফ, উখিয়া, বাঁশখালী ও আনোয়ারা উপজেলায় লবণ চাষ হয়। এসব এলাকায় চলতি বছর লবণ চাষ হয়েছে ৬৬ হাজার ৪২৪ একর জমিতে। চাষির সংখ্যা ৩৯ হাজার ৪৬৭। বিসিকের কর্মকর্তাদের দাবি তাঁদের তৎপরতায় জমি ও চাষির সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।
বিসিকের লবণ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গত ১২ মে পর্যন্ত যত লবণ চাষ হয়েছে সেগুলো এখন রক্ষা করতে তৎপর চাষিরা। একই সঙ্গে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে বিসিকের ১২টি কেন্দ্র থেকে প্রচারণামূলক লিফলেট বিতরণ, গ্রামে-গ্রামে মাইকিং, লবণ চাষ করা অঞ্চলগুলোর মসজিদের মাইকে প্রচারণা চালানো হয়েছে। নিচু জমি থেকে লবণ সরিয়ে নিয়ে উঁচু স্থানে পলিথিনে মুড়িয়ে রাখা, মাটি খনন করে তার নিচে সংরক্ষণ করা হয়েছে।এ বিষয়ে বিসিকের লবণ বিভাগের প্রধান সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমাদের অফিসগুলো টেকনাফ, কুতুবদিয়া, মহেশখালীর প্রত্যন্ত অঞ্চলে। আমরা সার্বক্ষণিক কন্ট্রোল রুম রেখেছি। কোনো লবণ খোলা অবস্থায় আছে কি না তা দেখে সেগুলো আমরা সংরক্ষণের কথা বলছি। এখন মোটামুটি সব কিছু গুছিয়ে নিয়ে এসেছি। আমাদের ১২টি কেন্দ্রে একটি করে টিম কাজ করছে।’