ইউক্রেনে রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধ করে বিশ্বজুড়ে নজরে আসে ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনী। এরপর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয় রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে। পরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাধারণ ক্ষমায় রাশিয়া ছেড়ে বেলারুশে পাড়ি জমায় এই বাহিনী।
এবার প্রকাশ্যে আসল নতুন তথ্য। এখন থেকে আর ইউক্রেন যুদ্ধে নয়, এবার যোদ্ধাদের আফ্রিকায় লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হতে বললেন বাহিনীর প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিন। গত বুধবার টেলিগ্রামে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে যোদ্ধাদের এই নির্দেশনা দেন তিনি।উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল থেকে সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, লিবিয়া, মালিসহ বেশ কয়েকটি আফ্রিকান দেশে কাজ করছে ওয়াগনার বাহিনী। গত সোমবার সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকের প্রেসিডেন্সি জানিয়েছে, আগামী ৩০ জুলাইয়ের গণভোট সুরক্ষিত করতে সহায়তা করার জন্য কয়েক ডজন ওয়াগনার যোদ্ধা দেশটিতে পৌঁছেছেন।
গত মাসে সশস্ত্র বিদ্রোহের পর থেকে এই প্রথমবার প্রিগোজিনের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেল ভিডিওটির মাধ্যমে। এতে তাকে বলতে শোনা যায়, স্বাগতম ছেলেরা… বেলারুশের মাটিতে স্বাগতম।
ভিডিও বার্তায় ওয়াগনার প্রধান বলেন, আমরা সম্মানজনকভাবে লড়েছি। আপনারা রাশিয়ার জন্য অনেক কিছু করেছেন। সম্মুখ যুদ্ধক্ষেত্রে যা ঘটছে, তা লজ্জাজনক। এর সঙ্গে আমাদের জড়ানোর দরকার নেই।
গত ২৩-২৪ জুন প্রিগোজিনের ভারী সমরাস্ত্রে সজ্জিত যোদ্ধারা বিদ্রোহের পর রাশিয়ার দক্ষিণাঞ্চলীয় রোস্তভ-ডন-অন শহর এবং ওই অঞ্চলের সামরিক কমান্ড সেন্টার দখল করে নেয়। এরপর বিশাল সামরিক বহর নিয়ে মস্কোর উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছিল তারা। একপর্যায়ে রাশিয়ার রাজধানী শহরের ২০০ কিলোমিটারের মধ্যেও পৌঁছে যায় ওয়াগনার বাহিনী। প্রিগোজিনের ভাষ্যমতে, এটি ছিল ‘ন্যায়ের জন্য অভিযান’, যার লক্ষ্য ‘অযোগ্য’ রুশ শাসকদের ক্ষমতাচ্যুত করা।
সেসময় ওয়াগনারের বিদ্রোহকে কঠোরহস্তে দমন করার অঙ্গীকার করেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তবে তার মিত্র বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্দার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্থতায় দু’পক্ষের মধ্যে চুক্তি হলে অভ্যন্তরীণ লড়াই থেকে রক্ষা পায় রাশিয়া।
চুক্তি অনুসারে, প্রিগোজিন ও তার যোদ্ধারা ওয়াগনার বাহিনীর সব কার্যক্রম বেলারুশে সরিয়ে নেবেন। অবশ্য এ মাসের শুরুর দিকে লুকাশেঙ্কো জানান, প্রিগোজিন বেলারুশ সফর শেষে রাশিয়ায় ফিরে গেছেন। আর গত সপ্তাহে নিশ্চিত করা হয়, ব্যর্থ বিদ্রোহের কয়েকদিন পরেই পুতিনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন ওয়াগান প্রধান।
বুধবারের ভিডিওতে প্রিগোজিনকে বলতে শোনা যায়, বেলারুশের স্থানীয় লোকদের সঙ্গে যেন যোদ্ধারা ভালো আচরণ করেন এবং আফ্রিকার জন্য শক্তি সঞ্চয় করে রাখেন।
তিনি বলেন, সম্ভবত আমরা কোনও এক পর্যায়ে এসএমও’তে (ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান) ফিরব, যখন নিশ্চিত হতে পারব যে, আমাদের আর লজ্জা পেতে হবে না। সূত্র: আল-জাজিরা