দিনভর নানা নাটকীয়তা শেষে ঘোষণা এলো বৃহস্পতিবার (২৭ জুলাই) নয়, শুক্রবার (২৮ জুলাই) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ করবে বিএনপি। ওইদিন দুপুর ২টায় এই সমাবেশ শুরু হবে।
বুধবার (২৬ জুলাই) রাতে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মহাসমাবেশের নতুন এই তারিখ ঘোষণা করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারের চলমান আন্দোলন আজ একদফার আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। এই আন্দোলনের অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)সহ দেশের সব গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল আগামীকাল ২৭ জুলাই রাজধানী ঢাকায় শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশসহ নানা কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেয়। আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে আগামীকাল বৃহস্পতিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা নয়াপল্টনে এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের কথা গত ২৩ জুলাই ঢাকা মহানগর পুলিশ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। মহানগর পুলিশ কর্তৃপক্ষ আমাদের সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উচ্চ আদালতের আপত্তি এবং কর্ম দিবসে নয়াপল্টনে মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানে জনদুর্ভোগের অজুহাতে সমাবেশ অনুষ্ঠানে আপত্তি জানিয়েছে। যদিও ইতোপূর্বে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এবং কর্মদিবসে নয়াপল্টনে অসংখ্য সমাবেশ-মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের দৃষ্টান্ত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি বরাবরই শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী বিধায় সরকার ও সরকারদলীয় বিভিন্ন বাহিনীর নানা উস্কানি এমনকি গত প্রায় এক বছরে ২০ জন নেতাকর্মীর হত্যা ও অসংখ্য নেতাকর্মী নির্যাতিত হওয়ার পরেও সীমাহীন ধৈর্য ও সহিষ্ণুতার পরিচয় দিয়েছে। এমনকি এই মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে ঢাকাসহ সারা দেশে অসংখ্য নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ও হচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন হোটেল এবং সারা দেশে নেতাকর্মীদের বাসা বাড়িতে পুলিশি তল্লাশি চালানো হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি শান্তিপূর্ণভাবে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার চলমান আন্দোলনকে এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ২৭ জুলাই বৃহস্পতিবারের পরিবর্তে আগামী ২৮ জুলাই শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিনে দুপুর ২টায় নয়াপল্টনে পূর্বঘোষিত মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিচ্ছে। আমরা আশা করি, দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে চলমান গণতান্ত্রিক ও শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আয়োজিত এই মহাসমাবেশ অনুষ্ঠানে সরকার কিংবা সরকারের কোনো প্রতিষ্ঠান বাধা সৃষ্টি করবে না। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আয়োজিত যে কোনো গণতান্ত্রিক কর্মসূচি বাধাগ্রস্ত করার যে কোনো অপচেষ্টা দেশবাসী প্রকৃতপক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে বাধা সৃষ্টি হিসেবেই দেখবে এবং এমন অপচেষ্টায় নিয়োজিতদের গণতন্ত্র ও সুষ্ঠু নির্বাচনে বাধা সৃষ্টিকারী হিসেবেই গণ্য করবে।
তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে শান্তিপূর্ণভাবে আগামী শুক্রবারের মহাসমাবেশ সফল করার আহ্বান জানান।
এর আগে সেখানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের একদফা দাবিতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার ঢাকায় মহাসমাবেশের কর্মসূচি ছিল বিএনপির। তবে মহাসমাবেশ নিয়ে শেষ মুহূর্তে তৈরি হয় নাটকীয়তা। দলটি সমাবেশের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অথবা নয়াপল্টন চাইলেও দুপুরে মহানগর পুলিশ সায়েদাবাদ বাস টার্মিনালের পাশে গোলাপবাগ মাঠে বিএনপিকে সমাবেশ করার পরামর্শ দেয়। এমন প্রেক্ষাপটে ভেন্যু নির্ধারণ নিয়ে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা জরুরি বৈঠক করেন।
পরে পুলিশকে জানানো হয়, তারা গোলাপবাগে যাবে না, প্রয়োজনে এক দিন পরে সমাবেশ করতেও রাজি।