মৃত কর্মকর্তাকে বদলি, অবসরপ্রাপ্তকে পদায়ন

0
70

দেড় বছর আগে মারা যাওয়া জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এক শুল্ক কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, একই আদেশে পদায়ন করা হয়েছে প্রায় ছয় মাস আগে অবসরে যাওয়া এক কর্মকর্তাকেও। গত বুধবার এনবিআরের শুল্ক ও ভ্যাট প্রশাসন-১-এর দ্বিতীয় সচিব শেখ মেজবাহ-উল-সাবেরিন স্বাক্ষরিত এক আদেশে এই বদলি ও পদায়ন করা হয়। এদিকে এমন ভুলের কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শুল্ক কর্মকর্তারা। পরে ত্রুটি সংশোধন করে এনবিআর। তবে সংশোধনের আদেশেও দেখা গেছে নানা অসংগতি।

এনবিআর সূত্র জানায়, প্রায় বছর দেড়েক আগে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে কর্মরত অবস্থায় মারা যান রাজস্ব কর্মকর্তা মোহাম্মদ ঈসা খান। মারা যাওয়া এই কর্মকর্তাকে গত মঙ্গলবার এনবিআরের এক বদলি আদেশে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস থেকে কাস্টম, এক্সসাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, রংপুরে বদলি করা হয়। অথচ এই কর্মকর্তার পেনশন গত ১৭ জানুয়ারি মঞ্জুর করা হয়েছে। এ ছাড়া একই আদেশে অবসরে যাওয়া কর্মকর্তা আব্দুল মজিদকে কাস্টম, এক্সসাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, রংপুর থেকে ঢাকা উত্তর ভ্যাট কমিশনারেটে বদলি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআরের শুল্ক ও ভ্যাট প্রশাসন-১-এর দ্বিতীয় সচিব মেজবাহ-উল-সাবেরিন বসুন্ধরা নিউজকে বলেন, মারা যাওয়া রাজস্ব কর্মকর্তার বিষয়ে আমাদের কাছে তথ্য ছিল না। তাই বদলির আদেশ করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এই আদেশ সংশোধন করা হয়েছে। পিডিএস থাকার পরও এমন হওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব সময় সবার তথ্য প্রধান কার্যালয়ে থাকে না।

এনবিআরের এই আদেশ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, এটি ভুলে ভরা। এতে শুধু মারা যাওয়া বা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের বদলির বিষয়টি ভুল হয়েছে তা নয়, রয়েছে আরও অসংগতিও। আদেশে খোদ এনবিআরের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের নামও ভুল লেখা হয়েছে। আদেশে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, মূল্য সংযোজন কর, ঢাকায় দুজন কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। এনবিআরে এই নামে কোনো অধিদপ্তর নেই। এ ছাড়া চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে এক বছর আগে বদলি হওয়া তপন কুমার দাশকে কুমিল্লা ভ্যাট কমিশনারেট থেকে ঢাকা পশ্চিম ভ্যাট কমিশনারেটে বদলি করা হয়েছে। আসলে এই কর্মকর্তা কুমিল্লায় নয়, কর্মরত রয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসে। এ ছাড়াও আরেক কর্মকর্তার জন্মতারিখ ভুল লেখা হয়েছে। সব মিলে এনবিআরের ভুলে ভরা আদেশে ক্ষুব্ধ শুল্ক কর্মকর্তারা।

শুল্ক কর্মকর্তারা বলছেন, দুই বছর পরপর কর্মকর্তাদের বদলি করার কথা থাকলেও এনবিআর তা করছে না। অথচ মৃত, অবসরে যাওয়া কর্মকর্তাদের যাবতীয় তথ্য থাকার পরও এমন আদেশ জারি হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ হলো এনবিআরের শুল্ক প্রশাসনের সদস্য মান্নান শিকদার এক মাস আগে অবসরোত্তর ছুটিতে গেছেন। কিন্তু এক মাস ধরে শুল্ক প্রশাসনের কোনো সদস্য নেই। এনবিআরের এক সদস্যকে ছুটি প্রতিস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যে কারণে হচ্ছে এ ধরনের ভুল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here