ঢামেকে মধ্যরাতে দালালদের দুই গ্রুপের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া-মারামারি

0
73

ঢাকা মেডিকেল কলেজ(ঢামেক) হাসপাতালে মধ্যরাতে দালালদের দুই গ্রুপে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

রবিবার(২৭ আগষ্ট) দিবাগত রাত সাড়ে বারোটার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

আহত নাদিম জানান, আমি রাতে ২১১ নাম্বার ওয়ার্ডের সামনে ছিলাম। আমি মেডিকেয়ার হাসপাতালে চাকরি করি। রাত বারোটার দিকে আমার ভাগ্নি সীমার ২১২ তে সিজার হচ্ছিল। তখন আমি সেখানে দাঁড়িয়েছিলাম।পরে  নোবেল,তাসকিন,দীপু,ইমন,রক্সি,সাইফুলসহ ২৫ থেকে ৩০ জন আমাকে দুই তালা থেকে টেনে নামিয়ে বাগান গেটের ভিতর এনে গালাগালি করে এবং এলোপাতাড়ি কিল ঘুসি মারতে থাকে।পরে আমাকে এবং মোহন নামে আরেক ছোট ভাইকে ধরে নিয়ে চাংখারপুল চলে যায়। আমার আরেক সহকর্মী মিরাজের বাসার সামনে তাকে ধরে আবার মারপিট করবে সেই জন্য।পরে আমাদের লোকজন খবর পেয়ে তাদের ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়। পরে আমি ঢাকা মেডিকেলে এসে চিকিৎসা নেই।

সে আরো জানায়, তারা মোহাম্মদপুরের কলেজগেটে ডা. মাহফুজের টিজি হাসপাতালের রোগী নেওয়ার জন্য প্রায়ই এসে বিভিন্ন ধরনের হুমকি ধামকি এবং মারপিটের চেষ্টা করে।২১১ এবং ২১২ নাম্বার ওয়ার্ডে এসে তারা রোগী ভাগিয়ে টিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রায় এই কাজগুলো করে। সে আমার সাথে এসে কথা বলতে পারতো কিন্তু কথা না বলে আমাকে সে এভাবে মারবে আমি তাদের কাছ থেকে আশা করিনি। কি কারনে সে আমাকে মারপিট করবে সেটির কারন এখনো খুঁজে পাইনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোবেল বলেন, আমি একটি অনলাইনে কাজ করি সেটি তথ্য সংগ্রহ করতে যাই।পরে তারা আমাকে জরুরি বিভাগের পাশে ব্রিজের উপর একা পেয়ে তারা আমাকে মারপিট করে। পরে আমি আনসার সদস্যদের সহযোগিতায় পুলিশ ক্যাম্পে আশ্রয় নেই।

আপনি তো ঢাকা মেডিকেলে এসে দালালি করেন সে বিষয়ে জানতে চাইলে নোবেল বলেন, আমি কোন দালালি করি না আমি সংবাদ সংগ্রহের কাজে গিয়েছিলাম।

নাদিম নামে ওই যুবককে আপনি কেন মারপিট করেছেন সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কাউকে মারপিট করিনি বরং তারাই আমাকে মারপিট করে আহত করেছে।

খবর নিয়ে জানা যায়, নোবেল মাদকাসক্ত অবস্থায় বাইরে থেকে বিভিন্ন লোকজন এনে প্রায় ঢাকা মেডিকেলে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করে। কয়েক মাস আগে নোবেল ২১২ থেকে রোগী ভাগিয়ে টিজি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য ডাক্তারের সাথে টানাটানি করে। পরে পুলিশ ও আনসার সদস্যদের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।গতকাল যারা মারামারি করেছে দুই পক্ষ তারা সবাই দালাল চক্রের সদস্য।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, ঢাকা মেডিকেলের ২১১ নাম্বার ওয়ার্ডে এনআইসিইউ সংকট থাকায় দালাল চক্ররা বিভিন্ন বেসরকারী হাসপাতালে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে যায়। গতকাল যারা ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও মারামারির ঘটনা ঘটে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালে কর্মচারী বলেন, আমার সাথে নোবেলের বাগান ঘেটে দেখা হয়।তখন নবেল বলে দিসি নাদিমরে আজকে। মারতে মারতে জরুরি বিভাগে দিয়ে এসেছি। আজকে পুরা বাগান গেট আমার আজকে যাকেই পাব তাকেই পেটাবো। সে যে বিষয়টি বলেছে সংবাদ সংগ্রহের কাজে এসেছিল সে বিষয়টি একটি হাস্যকর বিষয় ছাড়া আর কিছুই না। সে বিষয়টিকে ধামাকা দেওয়ার জন্য বিভিন্ন কথা বলছে।

জানতে চাইলে ঢামেক হাসপাতালের আনসারের প্লাটুন কমান্ডার(পিসি) উজ্জল বেপারী বলেন, গতকাল মধ্যরাতে একটি মারামারির ঘটনা ঘটে। কেবা কারা মারামারি করেছে সে বিষয়টি বলতে পারছি না।জানতে পারি প্রথমে একটি গ্রুপ বাগান ঘেঁটে একজনকে মারপিট করে।পরে অন্য আরেকটি গ্রুপ জরুরী বিভাগের পাশের ব্রিজের উপরে মারপিট করে পালিয়ে যায়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢামেকহাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ নাজমুল হক বলেন, আমি বিষয়টি আপনার কাছ থেকে জানলাম। আমাদের নিউরোসার্জারি ওয়ার্ডের জন্য আইসিইউ তৈরি করা হচ্ছে। এনআইসিইউ এক্সটেন্ড করা খুবই কষ্টকর তারপরও আমরা চেষ্টা করছি এটা কিভাবে আরো বাড়ানো যায়। এই ঘটনা যাতে না ঘটে সেই বিষয়ে আমি ব্যবস্থা নিচ্ছি বলে জানান তিনি।

এসএএ/

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here