অবশেষে হাসি ফুটল সাকিব আল হাসানের মুখে। ছয় ম্যাচ পর বিশ্বকাপে দল জয়ের স্বাদ পেল। সাকিব নিজে পেলেন ম্যান অব দ্য ম্যাচ। ওয়ানডে বিশ্বকাপে যা তার চতুর্থ শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার। শ্রীলঙ্কাকে ৩ উইকেটে হারানোর দিনে সাকিব বেশ খোশমেজাজে। কেননা যে ছন্দ, যে পারফরম্যান্সের কথা সেই ধর্মশালা থেকে বলে আসছিলেন তা পাওয়া গেল দিল্লিতে। মাঝে চেন্নাই, পুনে, মুম্বাই, কলকাতায় খুঁজেও পাননি। প্রত্যাশিত এক জয়ের পর সাকিবের মুখে হাসি থাকবে স্বাভাবিক।
কিন্তু এদিন সাকিব নিজের অলরাউন্ড পারফরম্যান্সের চেয়েও বেশি আলোচনায় অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে নেওয়া এক সিদ্ধান্ত। ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম টাইমড আউট আবেদন করে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়কে ড্রেসিংরুমে পাঠানো অধিনায়ক সাকিব। শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যান অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুস সময়মতো ক্রিজে না থাকায় বাংলাদেশের অধিনায়ক আম্পায়ারের কাছে টাইমড আউট আবেদন করে।
তাতে মেলে সাফল্য। অবশ্য ম্যাচশেষে রাগে ক্ষোভে ফোটে পড়েন ম্যাথুজ। ম্যাচ শেষে সাকিব ও বাংলাদেশকে এক অনেক কথাও শুনিয়েছেন। কিন্তু তাতে কিছু আসে-যাচ্ছে না সাকিবের।আইসিসি এই আউটকে বৈধতা দিয়েছে। এমসিসির আইনেও তা রয়েছে। তাহলে সাকিবের আউট নিতে সমস্যা কোথায়? ম্যাচের পর অধিনায়ক এসেছিলেন গণমাধ্যম সামলাতে। সেখানে ম্যাথুজের আউটের প্রশ্নটাই ছিল সবার আগে।
এরপর আরো অনেক। সব প্রশ্নের উত্তরই সাকিব দিয়েছেন ফ্রন্টফুটে। বরং কিছু জায়গায় প্রশ্নকর্তাকেও দ্বিধায় ফেলেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক। ম্যাথুজকে আউট করে কোনো দুঃখ প্রকাশ করার ইচ্ছে হচ্ছে কিনা জানতে চাইলে সাকিব বলেছেন, কোনো দুঃখ প্রকাশ নেই। কিংবা ক্রিকেটের স্পিরিট নিয়ে জানতে চাইলে সোজাসাপ্টা বলেছেন, তাহলে আইসিসির উচিত আইনটা দেখা এবং নিয়ম পরিবর্তন করা।
মাঠে কি হয়েছিল পুরো ঘটনা খুলে বলেছেন সাকিব, আমার কাছে এসে একজন ফিল্ডার বলেছিল, আমি যদি এখন আপিল করি তাহলে ক্রিকেটের আইনে আউট হবে। কারণ টাইম ফ্রেমের মধ্যে সে (ম্যাথুজ) গার্ড নেয়নি। আমি এরপর আম্পায়ারের কাছে আপিল করি। আম্পায়ার জানান, ও যদি আউট হয়ে যায় তুমি কি তাকে ফেরাবে। যদি ফেরাও তাহলে ভালো দেখাবে না। আমি জানাই, ব্যাক করাবো না। আমরা একসঙ্গে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ খেলেছি। অ্যাঞ্জেলোকে আমি লম্বা সময় ধরে চিনি সেই ২০০৬ থেকে। দূর্ভাগ্যজনক। কিন্তু আইনেই এটা আছে।
মাঠে প্রতিপক্ষ। মাঠের বাইরে বন্ধু। পেশাদার সাকিব নিজেদের সম্পর্ককে দেখছেন এমনভাবেই। তাইতো ম্যাথুজের জায়গা তিনি থাকলে কি করতেন সেই প্রশ্ন তার কোর্টে গেলে খুব স্বাভাবিকভাবেই বলেছেন, আমি সতর্ক থাকবো যেন এটা আমার সঙ্গে না হয়। আম্পায়ার ম্যাথুজকে আউট দেওয়ার পর সাকিবের সঙ্গে তাকে কথা বলতে দেখা যায়।
মাঠে দুজনের ভেতরে কী আলোচনা হয়েছে সেই কথাও বললেন সাকিব, আমরা দুজন দুজনের সঙ্গে ২০০৬ সাল থেকে খেলছি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও প্রচুর খেলেছি। আমি তাকে খুব ভালোভাবে চিনি। সেও আমাকে খুব ভালোভাবে চেনে। সে আমাকে এসে জিজ্ঞেস করেছিল, আমি আবেদন তুলে নেব কিনা? আমি জানিয়েছি, ‘আমি তোমার পরিস্থিতি বুঝতে পারছি। এটা আনফরচুনেট। কিন্তু আমি চাই না।