বাগেরহাটের চিতলমারীতে পাওনা টাকা ফেরত চাওয়ায় রুবেল হাওলাদার নামে এক তরুণকে (২২) পিটিয়ে হত্যার দায়ে এক যুবককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সাথে আদালত ওই ব্যক্তিকে দশ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় এই মামলার অন্য নয় আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রবিউল ইসলাম আসামীদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন। যাবজ্জীবন দণ্ড পাওয়া রাজু ফকির (২৫) চিতলমারী উপজেলার খিলিগাতি গ্রামের রেজাউল ফকিরের ছেলে।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, মিজানুর ফকির, লালন ফকির, মিলন ফকির, টিংকু ফকির, মিন্টু ফকির, লিয়াকত ফকির, শওকত ফকির, জলিল ফকির ও রেজাউল ফকির। সবার বাড়ি চিতলমারী উপজেলার খিলিগাতি গ্রামে। এরা সবাই পরষ্পর পরষ্পরের আত্মীয়।
মামলার বরাত দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোহম্মদ আলী সাংবাদিকদের বলেন, বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার খিলিগাতি বাজারে দুই ভাই রবিউল হাওলাদার ও রুবেল হাওলাদার মাছের খাবারের দোকান পরিচালনা করত। স্থানীয় খিলিগাতি গ্রামের রেজাউল ফকির নামে এক ব্যক্তিকে ১৮ হাজার ৯৬০ টাকার মাছের খাবার বাকিতে বিক্রি করে। ২০১৯ সালের ২ মে রাতে রেজাউল দোকানে আসলে তাঁর কাছে পাওনা টাকা চায় তারা। পাওনা টাকা চাওয়ায় রেজাউলের সাথে দুই ভাইয়ের কথাকাটাকাটি হয়। এসময়ে রেজাউলের সাথে থাকা বেশ কয়েকজন মিলে ক্রিকেট খেলার স্ট্যাম্প দিয়ে রুবেলকে এলোপাথাড়ি পিটিয়ে আহত করে চলে যায়। পরে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
এই ঘটনায় ওইদিনই নিহতের মা শিরিনা বেগম বাদী হয়ে নয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩/৪ জনকে আসামি করে চিতলমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এই হত্যা মামলাটি জেলা গোয়েন্দা পুলিশে হস্তান্তর করা হলে গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মো. রেজাউল করিম তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৭ আগস্ট দশজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আদালতের বিচারক ১৭ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় রাজু ফকিরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাস দিয়ে এই রায় ঘোষণা করেন।
আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন আইনজীবী একে আজাদ ফিরোজ টিপু ও আলী আকবর।