ইজারা নেই, নেই বৈধতা৷ তবুও কেবল ক্ষমতার জোরে ছাগলের হাট বসিয়ে রমরমা চাদাবাজির অভিযোগ উঠেছে মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুল হাসান রাসেল বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে, থানা ছাত্রলীগের পদ ব্যবহার করে প্রভাব খাটিয়ে এই হাট বসিয়েছেন।
ঢাকা-১৩ আসনের সবচেয়ে জনবহুল জায়গা হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজার৷ এই বাজারের বিপরীতে লালমাটিয়া ত্রিকোণ পার্ক। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র আলেয়া সারোয়ার ডেইজি এই পার্ক নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। স্থানীয়দের জন্য অবকাশ যাপনের জায়গা হিসেবে পার্ক নির্মাণ করা হলেও তা বরাবরই থাকে মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের দখলে।
পরিচয় প্রকাশ না করার শর্তে মোহাম্মদপুর টাউন হল বাজারের একজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘পার্ক তো পাবলিকের জন্য না, ছাত্রলীগের জন্য। যেখানে একটা রাজনৈতিক কার্যালয় আছে, সেখানে সাধারণ লোকজম বসে শান্তি পায়?’
এবার সেই পার্কের সামনেই গড়ে তোলা হয়েছে ছাগল বিক্রির হাট। অনুমোদনহীন এই হাটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুল হাসান রাসেল।
শনিবার রাতে ইজারাবিহীন হাটে দেখা যায়,টেবিল বসিয়ে কিছু যুবক হাসিল আদায় করছেন। টেবিলের দুই পাশে পার্কের উত্তর অংশের পুরো ফুটপাত জুড়েই বিক্রির উদ্দেশ্যে ছাগল রাখা হয়েছে।
বিক্রিত ছাগলের উপর ৫ শতাংশ হারে নেয়া হচ্ছে হাসিল। আর সে হাসিল আদায়ের টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে আছেন ৩৪ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আল আমিন। এছাড়া থানা ছাত্রলীগ সভাপতির বিশ্বস্ত হিসেবে পরিচিত নেতাকর্মীদের দেখা গেছে এই অবৈধ হাটের হাসিল গ্রহণের কাজে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাটের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততার বিষয়টি অস্বীকার করেন নাইমুল হাসান রাসেল। তিনি বলেন, ‘হাটের সঙ্গে ছাত্রলীগ বা আমি জড়িত নেই। এখানে আসলে কোনো হাট নেই। কিছু মানুষ ফুটপাতে ছাগল বিক্রি করে৷ এটা অনেক আগে থেকে হয়ে আসছে। আমি যখন ছাত্রলীগের কোনো দায়িত্বে ছিলাম না, তখনও এখানে ছাগল বিক্রি হতো।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায় বর্তমান সভাপতি নাঈমুল হাসান রাসেল এর আগে থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন সেই সময় থেকেই মূলত তিনি প্রভাব খাটিয়ে ইজারা ছাড়া হাট বসিয়ে এখান থেকে মোটা অংকের চাঁদা আদায় করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থানা ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী বলেন, ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুল হাসান রাসেল ও থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আয়মান ওয়াসেফ অমিত তাদের রয়েছে আলাদা গ্রুপ। তবে এখানে থানা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের কোন সম্পৃক্ততা নাই কারণ ওই পার্কের ভিতরে তার অফিস এবং সে থানা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক থেকেই এখানে অবৈধভাবে ছাগলের হাট বসিয়ে চাঁদা আদায় করেন।
তারা আরো বলেন, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত একটি হাট রয়েছে বসিলা চল্লিশ ফিট এলাকায়। এখান দিয়ে ছাগলের গাড়ি যাওয়ার সময় তারা নামিয়ে এখানেই হাট বসায়।
স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, শুধু চলতি বছর নয়। গত বছরও একই স্থানে ছাত্রলীগের ক্ষমতাবলে ছাগলের হাট বসিয়েছিলেন এই থানা ছাত্রলীগ নেতা।
ইজারা না থাকার পরেও জনবহুল স্থানে হাট বসানোর বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও স্থানীয়দের মাঝে প্রশ্ন রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)মাহফুজুল হক ভুঞাকে ফোন করা হলেও তিনি কল ধরেননি।
এসএএ//