সংকট না থাকলেও রাজধানীতে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম

0
27

দেশের বিভিন্ন মোকাম, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুত আছে। ভারতে দাম বাড়ার অজুহাতে রাজধানীতে খুচরা বাজারে দাম বাড়ালেন ব্যবসায়ীরা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ১০ টাকা পর্যন্ত। তবে পাইকারি বাজারে দামের তেমন হেরফের হয়নি। চাষিদের অভিযোগ, ঢাকার ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়াচ্ছেন।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজার তদারকির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খুচরা পর্যায়ে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০-১০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও দাম ছিল ৮৫-৯০ টাকা। এক মাস আগে ছিল ৭০-৭৫ টাকা। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ৫-১০ টাকা। আর এক মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ২০-২৫ টাকা। গতকাল আমদানি করা প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯৫-১০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগে দাম ছিল ৯০-৯৫ টাকা এবং এক মাস আগে ছিল ৭৫-৮৫ টাকা। এক মাসের ব্যবধানে বিদেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১৫-২০ টাকা।

পুরান ঢাকার শ্যামবাজারের মেসার্স আজমিরি ভান্ডারের বিক্রয় প্রতিনিধি গোলাপ হোসেন জানান, কোরবানির ঈদের আগে-পরে তাঁদের বাজারে পেঁয়াজের দাম ২-৩ টাকা ওঠানামা করেছে। গতকাল প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৭৫-৭৭ টাকায় আর আমদানি করা পেঁয়াজ ৮০-৮৫ টাকায়। 

পেঁয়াজ আমদানিকারক শ্যামবাজারের হাফিজুর রহমান বলেন, ভারতে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। এ কারণে দেশের বাজারে দাম কিছুটা বাড়তি। পেঁয়াজের মজুত এখন কৃষকের হাতে। দাম কম বা বেশি হওয়া মূলত তাঁদের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।

যদিও চাষিরা বলছেন, দেশে পেঁয়াজের কোনো অভাব নেই। পাবনার সুজানগর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের কৃষক মামুনুর রহমান বলেন, দেশে পেঁয়াজের কোনো সংকট নেই। দাম ভালো পাওয়ায় অনেকেই আবাদ বাড়িয়েছেন। তাঁদের এলাকায় দুই-তিন দিনে দাম কিছুটা কমেছে। ঢাকার খুচরা বাজারে দাম বেশি হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ঢাকার ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ান।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, দেশে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে পেঁয়াজ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ৩৬ লাখ টন। সংরক্ষণ করতে গিয়ে নষ্ট হয় ৩০ শতাংশ পেঁয়াজ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ লাখ টন। তবে সম্প্রতি সরকার পেঁয়াজ-রসুন সংরক্ষণে আধুনিক ঘর নির্মাণ করেছে। এতে কৃষক পর্যায়ে পেঁয়াজ নষ্ট হচ্ছে খুবই কম।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের অধীন কৃষক পর্যায়ে পেঁয়াজ ও রসুন সংরক্ষণপদ্ধতি আধুনিকায়ন প্রকল্পের পরিচালক হেলাল উদ্দিন বলেন, বর্তমানে ২২০টি ঘরে দুই হাজার টনের বেশি পেঁয়াজ মজুত আছে। আগামী দিনগুলোতে ৩০০ ঘরে সাড়ে চার লাখ টন পেঁয়াজ রাখা সম্ভব হবে। সরকার কৃষকদের জন্য আধুনিক ঘর নির্মাণ করায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোও এগিয়ে এসেছে। তারাও এই ধরনের ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নিচ্ছে। দেশে উৎপাদিত পেঁয়াজের পচন কমাতে পারলে তিন-পাঁচ বছরের মধ্যে আমদানির প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here