হস্তান্তরের আগেই ‘জলে’ ৭ কোটি টাকার সড়ক

0
30

বরগুনার পাথরঘাটায় হস্তান্তরের আগেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে একটি সড়ক। সামান্য বৃষ্টিতেই ইতিমধ্যে ওই সড়কের দুই পাশের পিচঢালাই ভাঙতে শুরু করেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। শুরু থেকে তাঁরা প্রতিবাদ করেছেন। কিন্তু কাজ হয়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, চার কিলোমিটারের সড়কটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৭ কোটি টাকা। ঠিকাদারকে রাস্তা ঠিক করে দিতে হবে। না হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সরেজমিনে দেখা যায়, পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে থেকে হরিণঘাটা ইকোপার্কের আগে জাফরের দোকান নামক স্থান পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়কের কাজ শেষ হয়েছে তিন মাস আগে। এর মধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে রাস্তার পিচঢালাই উঠে ইট-সুরকি সরে গিয়ে রাস্তা ভেঙে গেছে। এতে করে ওই এলাকায় যানবাহন চলাচল করতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

উপজেলা এলজিইডি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, সড়ক প্রশস্তকরণ ও মজবুতকরণের জন্য ২০২২-২৩ অর্থবছরে দরপত্র আহ্বান করা হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৬ কোটি ৭২ লাখ ৬৯ হাজার ৫২৫ টাকা। কাজটি ই-টেন্ডারের মাধ্যমে পটুয়াখালীর আবুল কালাম আজাদ নামের এক ঠিকাদার পান। সাব-কন্ট্রাক্টে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় বরগুনার দুই ঠিকাদার শাহিন ও শহিদুল ইসলাম মৃধাকে।

এই সড়কের কাজের শুরু থেকেই নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলেছিলেন স্থানীয়রা। তবে এলাকার কিছু প্রভাবশালীর চাপে তাঁরা কিছু করতে পারেননি। তাঁদের এই অনিয়মের কারণে এখন ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক জাতীয় দলের ফুটবলার মজিবুর রহমান কালু বলেন, ‘দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর রাস্তাটি নতুন করে হতে দেখে অনেকেই ভেবেছিল, এই বুঝি কষ্টের দিন শেষ। কিন্তু এ কী হলো রাস্তাটির। মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে রাস্তার দুই পাশ ক্ষয়ে ক্ষয়ে পড়তে আরম্ভ করেছে। এবার কষ্ট যেন আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে।’ 
এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদারের প্রধান সাব-কন্ট্রাক্টর মোহাম্মদ শাহিনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁর সাড়া মেলেনি। তবে সাব-কন্ট্রাক্টর শহিদুল ইসলাম বলেন, শিডিউল মেনেই সড়ক নির্মাণ করা হচ্ছে। 

এ বিষয়ে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী চন্দন কুমার চক্রবর্তী বলেন, ‘আমাদের কাছে এখনো কাজ বুঝিয়ে দেননি ঠিকাদার। তবে রাস্তার পাশে পর্যাপ্ত মাটি না দেওয়ায় দুই পাশ ভেঙে গেছে।’ তিনি জানান, হস্তান্তরের আগপর্যন্ত রাস্তার সব দায়ভার ঠিকাদারের। তাঁরা রাস্তার ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘সড়ক নির্মাণে অনিয়মের বিষয়ে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্ত কমিটি গঠন করে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া উপজেলা প্রকৌশলীকে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক মেরামত না করা পর্যন্ত ঠিকাদারকে বিল পরিশোধ না করতে বলা হয়েছে।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here