ডিবি হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ‘হেজাজের’ মৃত্যু 

0
8

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)ওয়ারী বিভাগের হেফাজতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ক্যাপ্টেন ইমনের অন্যতম সহযোগী হেজাজ বিন আলিম ওরফে ফাহিম আহমেদ(৩৭) মারা গেছেন।

শনিবার (১৫ মার্চ) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নেফ্রোলজি বিভাগে ডায়ালাইসিস অবস্থায় মারা যায় হেজাজ।

নিহত হেজাজের মামা হাবিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, গত ১১ মার্চ যৌথ বাহিনী আটক করে মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করে।তার বিরুদ্ধে ডাকাতির একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে পরদিন (১২ মার্চ)পুলিশ আদালতে পাঠিয়ে দেয়।আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর হেজাজকে ধানমন্ডির জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শনিবার ভোররাতে দিকে তাকে ডিবি ওয়ারী বিভাগ চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়।আমরা তাদের বলেছিলাম আপনারা এখানেই রেখে চিকিৎসা করান। কিন্তু তারা আমাদের কথা না শুনে তাকে অসুস্থ অবস্থায় এখান থেকে নিয়ে পরে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করে।পরে সন্ধ্যার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় হেজাজ।

হেজাজের মামা আরও অভিযোগ করে বলেন,যৌথবাইিনী যখন তাকে আটক করেছিল তখন তাকে ব্যাপক মারধর করে। পরে মোহাম্মদপুর থানায় হস্তান্তর করে। এরপর হেজাজ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। আমরা ডিবিকে বারবার বলেছিলাম সে অসুস্থ তাকে এখানে রেখে চিকিৎসা করানো হোক কিন্তু তারা আমাদের কথা না শুনে তাকে ওই অসুস্থ অবস্থায় নিয়ে যায় পরে ঢাকা মেডিকেলের নেফ্রলজি বিভাগে ডায়ালিসিস অবস্থায় মারা যায় হেজাজ। পরিকল্পিতভাবে হেজাজকে হত্যা করা হয়েছে।আমরা কাদের কাছে বিচার দিব আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

ঢামেকে ডিবি ওয়ারী বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের সাথে কথা বলতে হবে এ বিষয়ে আমরা কিছু বলতে পারব না।

অন্যদিকে হেজাজের মৃত্যুর পর হাসপাতাল থেকে ডিবি পুলিশের সদস্যরা চলে যান। এরপর ময়নাতদন্ত ছাড়া তার পরিবার ঢাকা মেডিকেল থেকে নিয়ে চলে যান। পরবর্তীতে বিষয়টি জানাজানি হলে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ডিবির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। এরপর হেজাজ এর মরদেহ আবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সেখান থেকে মায়নাতদন্তের জন্য কলেজ মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়।

জানা যায়, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি হত্যা মামলায় ডিবি ওয়ারী বিভাগ শনিবার ভোর রাতের দিকে তাকে জাপান ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর ডিবি হেফাজতে ঢাকা মেডিকেলে মারা যায় হেজাজ।

নিহতের বাবা শাহ আলম খান অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলেকে পিটিয়ে ও ইনজেকশন দিয়ে হত্যা করেছে। আমরা কার কাছে অভিযোগ করবো আমার ছেলে তো আর ফিরে আসবেনা। তাকে আদালত থেকে জামিন করিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করালাম চিকিৎসার জন্য কিন্তু সে শেষ পর্যন্ত মারা গেল।

তিনি আরো বলেন, গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৭ তারিখে তার এনগেজমেন্ট হয়। সামনে তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর সে বেঁচে ফিরলো না।মৃত্যুর আগে হেজাজ জানায় যৌথ বাহিনী তাকে ব্যাপক মারপিট করে। পরে জামিনে বের হওয়ার পর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী ইফতেখার হাসান জানান, আমরা সিডিএমএস এ সার্চ দিয়ে তার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে ছাত্র হত্যার কোন মামলা পাইনি। তার বিভিন্ন রকমের নাম ছিল নামের বিভ্রাটের কারণে পরে তাকে একটি ডাকাতি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। পরদিন সে জামিনে বেরিয়ে যায়।

দুপুরের দিকে ওসি জানান, আমরা শীর্ষ সন্ত্রাসী ক্যাপ্টেন ইমনের অন্যতম সহযোগী আসল হেজাজকে গ্রেপ্তার করতে পেরেছি। কিছুক্ষণ পরে আপনাদের অফিসিয়ালি জানানো হবে।

রাতে ঢাকা মেডিকেলের মর্গে ওসি জানান, মোহাম্মদপুরে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একটি হত্যা মামলায় ধানমন্ডির একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে ডিবির একটি টিম তাকে শনিবার ভোর রাতের দিকে গ্রেপ্তার করে। পরে ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যার দিকে মারা যায় হেজাজ। এজাজ এর পরিবারের লোকজন তার মরদেহ ময়নাতদন্ত ছাড়াই নিয়ে চলে যায়। পরে ধানমন্ডি থেকে আবার মরদেহ ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয় বর্তমানে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেলের মর্গে রাখা হয়েছে।তবে ডিবি অফিসিয়ালি ওই আসামীকে তারা আমাদের কাছে হস্তান্তর করেনি।

বিএন/এসএএ//

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here