স্কুলের ছাদে ৫ ছাত্রীর ধূমপানের ভিডিও করেন দুই শিক্ষক, অতঃপর…

0
71

বিদ্যালয়ের ছাদে পাঁচ ছাত্রী ধূমপান (সিগারেট) করছিল। সেই দৃশ্য স্মার্টফোনে ভিডিও করেন দুই শিক্ষক ও এক আয়া। ছাত্রীদের ডেকে মারধর করার পর সেই ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়া, টিসি ও অভিভাবকদের জানিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান তারা। সেই ভয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে জিনিয়া খাতুন নামে এক স্কুলছাত্রী আত্মহত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন আরও এক ছাত্রী।

সোমবার বিকালে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে ওই ঘটনা ঘটে। মোছা. জিনিয়া খাতুন (১৪) ওই গ্রামের ব্যবসায়ী জিল্লুর রহমানের মেয়ে। সে সুলতানপুর মাহতাবুদ্দিন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা চেষ্টাকারী ছাত্রীর নাম পরিচয় জানা যায়নি। জিনিয়ার লাশটি বর্তমানে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।

নিহত ছাত্রীর মামা জাহিদ হোসেন জানান, ‘পাঁচজন ছাত্রী বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ছাদে সিগারেট খাচ্ছিল। তার ভাগ্নি জিনিয়া সেখানে ছিল। সিগারেট খাওয়ার দৃশ্য লাল্টু ও ওয়ালিউর রহমান নামে দুই শিক্ষক এবং আয়া শিউলি খাতুন ভিডিও করেন। পরে ছাত্রীদের ডেকে এনে ব্যাপক মারপিট করেন এবং ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়াসহ টিসি দিয়ে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া ও অভিভাবকদের জানানোর ভয় দেখান। 

তার ভাষ্য, বিদ্যালয় ছুটির পর বাড়িতে ফিরে শিক্ষকদের ওপর অভিমান করে নিজ ঘরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে জিনিয়া। মঙ্গলবার থানায় মামলা করা হবে।

জানতে চাইলে কয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৫ নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বর ও নিহত ছাত্রীর নানা গাজীউর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা ভুল করতেই পারে। তাই বলে কি শিক্ষকরা এভাবে ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখাবে। তিনি শিক্ষকদের শাস্তির দাবি করেন।

এ বিষয়ে জানতে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ওয়ালিউর রহমানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা করা হয়। কলটি প্রথমে ওয়েটিং দেখায়। পরে রিসিভ না করেই ফোনটি বন্ধ রাখায় তার মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুর রশিদ বলেন, তিনি বিকালে কাজে উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে এসেছিলেন। পরে একজনের মাধ্যমে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে ঘটনা শুনেছেন। তার ভাষ্য, ছাত্রী তো মরেই গেছে। এখন এসব বলে কি হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. কাজী এজাজ কায়সার বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে পরে জানাতে পারবেন তিনি।

কুমারখালী থানার ওসি মো. আকিবুল ইসলাম বলেন, মরদেহটি কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন তিনি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here